আগের রাতে ঘর গোছানোর কথা, পরের দিন সব শেষ! কীর্তিচক্র হাতে আবেগে ভাসলেন অংশুমানের স্ত্রী

স্বপ্ন ছিল, দুজনের একটা বাড়ি হবে। একেবারে ছবির মত সাজানো একটা সংসার হবে। সে কত কথা, কত পরিকল্পনা। কিন্তু এক রাতের তফাতেই বদলে গেল সব। সকালেই স্ত্রী খবর পেলেন, সবটা শেষ। দুহাতে জড়ো করা স্মৃতি নিয়ে জীবনের পথে একলা দাঁড়িয়ে পড়লেন ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং-এর স্ত্রী স্মৃতি সিং। যিনি এখনও বুঝতেই পারছেন না, এরপর কোনদিকে যেতে হয়। বিয়ের ৪ মাসের মাথায় সিয়াচেন প্রাণ কাড়ল জাওয়ানের। ক্যাপ্টেনের নববধূর কথায়, দেশের চোখে জল।

একসঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন পূরণ হয়নি শেরশা বিক্রম বাত্রা আর ডিম্পল চিনার। সেনার জীবনে এমন কত স্বপ্নই হারিয়ে যায়। ঠিক যেভাবে এক রাতের তফাতে সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং আর স্মৃতি সিং-এর। বিয়ের বছরও ঘোরেনি। তার আগেই সিয়াচেন প্রাণ কেড়েছে ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং-এর। সেই বীরত্বের সম্মানে এবার কীর্তিচক্রে ভূষিত করা হল তাঁকে। অংশুমানের সঙ্গে সম্পর্কে বরাবরের মতো দাঁড়ি টানা হয়ে গিয়েছে, একথা তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না। তবে, স্মৃতি বলছেন, স্বামীর নামে কীর্তি চক্রে হাত রেখেই যেন প্রথমবার সেই কঠিন সত্যিকে বিশ্বাস করলেন তিনি। তখনই তিনি বললেন, এতখানি অর্জন করতে অনেক কিছু সামলাতে হয়েছে তার স্বামীকে। বাকিটুকু সামলানোর দায়িত্ব না হয় তিনিই নেবেন।

অভিশপ্ত জুলাইয়ের কোন এক ভোর রাতে জওয়ানদের অস্ত্রাগারে আগুন লেগে যায়। নিজের জীবনের পরোয়া না করেই উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পরেন অংশুমান। আগুন ছড়িয়ে পরে সেনাদের চিকিৎসাকেন্দ্রের দিকেও। জীবনদায়ী ওষুধগুলোকে বাঁচানোর জন্য ছুটে যান তিনি। ফলে শরীরে অনেকগুলো পোড়ার ক্ষত নিয়ে মৃত্যু হয় অংশুমানের। সেই বীরত্বের কথা মাথায় রেখেই এবার তাঁকে মরণোত্তর কীর্তি চক্রে ভূষিত করা হল। আর সেই কীর্তি চক্রে হাত রেখেই আবেগে ভাসলেন স্ত্রী। যে ভিডিও আপাতত নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। চোখে জল গোটা দেশের।

সেনার জীবন যে কত কঠিন তা বোধ হয় ঠাণ্ডা ঘরে বসে আঁচ করা যায় না। সিয়াচেনের মতো কঠিন জায়গায় দাঁড়িয়ে দেশকে এবং দেশের সম্পদকে রক্ষা করার জন্য যারা নিজের জীবনের পরোয়া পর্যন্ত করে না। ব্যক্তিগত সুখের ঊর্ধ্বে যারা দেশের সুখকে এগিয়ে রাখেন- তাদের বিজনেস প্রাইম নিউজের তরফে কুর্নিশ।

সঙ্গে থাকুন, দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।