Trending
ধনতেরসে ধাক্কা খেল চিন। হাসছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। উঠছে ভারতের মার্কেট, ধরাশায়ী চিনের বাজার। মানে ধনতেরসে যতটা চাঙ্গা ভারত, ঠিক ততটাই গোঁত্তা খাচ্ছে চিনের মার্কেট। কিরকম? সেটাই তো বলব আজকের প্রতিবেদনে।
চিনা পণ্যে ছেয়ে গেছে বাজার। আলপিন হোক বা এলিফ্যান্ট- সর্বত্র চিনের দখলদারি। ভারতের মত কোটি কোটি কনজিউমারের কাছে পৌঁছে যেতে পেরেছেন চিনের ব্যবসায়ীরা। তাই হাজার লড়াই মুখে চললেও শক্তিপ্রদর্শনে পিছিয়ে থাকতে হয় জিংপিং সরকারকে। তবে ভারতে শুধু চিনা পন্যের দখলদারি, আর যে কারণে বারবার মার খেয়েছেন ভারতের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাই প্রধানমন্ত্রী ডাক দিয়েছিলেন, ক্যাম্পেন চালিয়েছিলেন ‘ভোকাল ফর লোকাল’। সেই ডাকে যে এখনো সাড়া দিচ্ছেন আমজনতা, তার একটা পূর্বাভাস পাওয়া গেছে। অনুমান করা হচ্ছে, চিনা পণ্য বাতিলের ইচ্ছেটা এখনো আমজনতার মধ্যে ভালোরকম লক্ষ্য করা গিয়েছে। ফলে তাঁরা চিনা পণ্য বাতিল করেছেন এবং একইসঙ্গে হাতে তুলে নিচ্ছেন ভারতীয় পণ্য। যে সকল পণ্য তৈরি করছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। আর তাতেই লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন দেশীয় ব্যবসায়ীরা। আর সেই সূত্রেই জানা যাচ্ছে যে, এবার ধনতেরস উপলক্ষ্যে নাকি গোটা দেশজুড়ে ব্যবসার অঙ্ক পৌঁছতে পারে ৫০ হাজার কোটি টাকায়। আর চিনের কত ক্ষতি হতে পারে আইডিয়া আছে? প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। এমনটাই অনুমান করছে কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডারস।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুক্রবার মানে আজ ১০ তারিখ থেকে ধনতেরসের কেনাকাটা শুরু হলেও দীপাবলি বা দিওয়ালির কেনাকাটা চলবে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। ধনতেরস উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ব্যাপক কেনাকাটা করেন। ফলে এই সময় চোখ থাকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তাঁরা চেষ্টা করেন কিভাবে এই বিপুল মার্কেট ধরা যেতে পারে। তার সঙ্গে রয়েছে কড়া চৈনিক টক্কর। অবশ্যই সেটা জাতীয় পর্যায় থেকে মানে সরকারের তরফ থেকে কোন ইনিশিয়েটিভ নেওয়া না হলে সাধারণ মানুষের হাতে সেই চায়না প্রোডাক্ট পৌঁছত। তবে সেই জায়গাটা এখন আলগা হচ্ছে মানে চিনের ব্যবসা ধীরে ধীরে জমি হারাতে শুরু করেছে।
ধনতেরসের সময় মানুষ কী কী কেনেন? যে কোন ধাতব পণ্য যেমন সোনা, রুপোর তৈরি পণ্য কেনা যেমন অত্যন্ত শুভ মনে হয় তেমনই অনেকে এসবের পাশাপাশি জামাকাপর, ইলেকট্রনিক্স, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, কম্পিউটার, আসবাব এসবও কিনে আনেন। একটা সময় ছিল, যখন সোনা বা রুপো ছাড়া যে কোন ধরণের পণ্য কেনার জন্য ভারতীয়দের ভরসা ছিল চিন, আজ সেই সিনারিও বদলের মুখে। অনুমান করা হচ্ছে, আম জনতা এখন যেটাই কিনতে চান সেখানে চিনের ছড়ি নয় বরং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তৈরি পণ্যকেই গুরুত্ব দেন বেশি। আর সেটাকেই হাতিয়ার করে অত্যন্ত আশাবাদী আমাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। ধনতেরসে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে গয়না বিক্রেতাদের মধ্যেও। গয়নার দোকানগুলোয় নানা ডিজাইনের সোনা, হিরে বা রুপোর গয়না বিক্রি হচ্ছে। মানুষের মধ্যে চাহিদা এখন ভরপুর। তাই গয়না কিনতে তাঁরা যেমন ভিড় জমাচ্ছেন দোকানে, তেমনই পিতলের বিভিন্ন বাসন কেনাতেও সাধারণের মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। পিতল ভগবান ধন্বন্তরীর প্রিয় ধাতু। তাই এই সময় ভালোরকম পিতলের বাসন বা পিতলের তৈরি পণ্যের চাহিদা ওপরের দিকেই থাকে। চিনা বাজারকে ধাক্কা দিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি নিজেও মহিলাদের ব্যবসা শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। এমনকি উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের বার্তা দিয়ে এলাকার মহিলাদের দীপাবলি রিলেটেড ব্যবসায়িক কাজকর্মে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আর যে কারণে স্থানীয়দের এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
সেই সূত্র ধরেই জানা যাচ্ছে, এই বছরে দীপাবলিতে কৃত্রিম গয়নার চাহিদা বেড়েছে। এমনকি কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডারস জানিয়েছে, এই সময় ভালোরকম বিক্রি বাড়তে পারে হোটেল-রেস্তোরাঁর। এমনকি মিষ্টির ডিম্যান্ড ভালো থাকায় দীপাবলিতে ক্যাটারিং ব্যবসা, হোটেল, রেস্তোরাঁ ব্যবসা এগুলো মেজর বুম করতে পারে বলেই মনে করছে স্থানীয় ব্যবসায়িক মহল। তাই বলছি, চিন ছাড়া গতি নেই এটা সত্যি কথা। শুধু ভারতের জন্য নয়, বিশ্ব অর্থনীতিকে রুল করছে চিন। কিন্তু চিনের ইকোনমি এখন নীচের দিকে যাচ্ছে। তাই চিনকে টেক্কা দেবার সেরা সময় এখনই। আর সেটা করতে গেলে, চিনকে রিপ্লেস করতে পারে একমাত্র আঞ্চলিক বাজার, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আর সেটাই করছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। দিনের শেষে ধনতেরসে যদি ভারতের ধনসম্পদ বৃদ্ধি পায় তাহলে তো ভালোই। দেশের অর্থনীতি মজবুত করতে তাই চিনা পণ্যকে পাশে সরিয়ে দেশজ পণ্যকে হাতিয়ার করতে হবে। আর সেটাই আপাতত ধনতেরসের মরশুমে চিনকে ধাক্কা দেবার মোক্ষম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। আজকের মতন এটুকুই। লাইক করুন, শেয়ার করুন আর সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ