উত্তরবঙ্গের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নেই সড়কপথ। নেই যান চলাচলের কোনরকম সুবিধা। ফলে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে বিশেষত গর্ভবতী মহিলাদের হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য গ্রামবাসীদেরই পোহাতে হয় ব্যপক দুর্ভোগ। এবার সেই সকল ঝামেলা থেকে অনেকটাই নিষ্কৃতি পেতে চলেছেন দুর্গম এলাকার পাহাড়বাসীরা। চালু হল পালকি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা। যা রাজ্যের মধ্যে তো বটেই। দেশের মধ্যেও সম্ভবত প্রথম হতে চলেছে এই পালকি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা।

অন্যান্য অ্যাম্বুলেন্সের মতন এই অ্যাম্বুলেন্সেও থাকছে প্রাথমিক চিকিৎসার যাবতীয় সরঞ্জাম। থাকবে একটি মিনি অক্সিজেন সিলিন্ডার। থাকবে স্যালাইনের ব্যাবস্থাও। এমনকি গরম জল ও বাচ্চা রাখার আলাদা বিছানাও। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাতায়াত করার জন্য পালকিবাহকদের জেলা স্বাস্থ্য দফতরের থেকে দেওয়া হবে বিশেষ প্রশিক্ষণ। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফ থেকে স্বাস্থ্য দফতরের সহায়তায় এই পরিষেবা চালু হল বক্সা পাহাড়ের জিরো পয়েন্ট থেকে। বুধবার এই পরিষেবার উদ্বোধন করেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা।

গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য বাঁশের মাচায় কাপড় বেঁধে কাঁধে করে তাঁদের ঝুলিয়ে আনতে হত। যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ তো বটেই। এছাড়া ঝড়, জল, বৃষ্টিতেও ভিজতে হত রোগীদের। এই অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা যেন তাঁদের অনেকটাই রেহাই দিল। পালকি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পেয়ে খুশি এলাকার মানুষরা।

সিনচুলা পাহাড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বক্সা, লেপচাখা, তাসিগাওয়ের মত ১৩ টি দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম। যেখানে ৫জিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানি কার্যত দাবি জানিয়ে বসেছেন ঠিক সেই সময় এই গ্রামগুলি থেকে এতদিন পর্যন্ত রোগী বা গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে আসাযাওয়া করাটাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। জরুরি পরিষেবা যেন তাঁদের কাছে ছিল আকাশের চাঁদ পাওয়ারই সামিল। আর ঠিক এমনই একটি সময়ে গ্রামবাসীদের জন্য মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়াল এই পালকি অ্যাম্বুলেন্স। কিছুটা হলেও পাহাড়বাসীর মুখে ফিরিয়ে আনল স্বস্তির হাসি।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার