Trending
ওদিকে মুকেশ অম্বানি ছোট ছেলের বিয়েতে খরচ করছেন ৫ হাজার কোটি টাকা। এদিকে হাজার হাজার মানুষের জিও ছাড়ার ধূম লক্ষ্য করা যাচ্ছে বাংলায়। বিএসএনএলের কানেকশন নেবার ঢল দিন দিন বাড়ছে। শুধু এই রাজ্যে বলে নয়। গোটা দেশেই এখন বিএসএনএল ট্রেন্ড। অনেকেই আছেন যারা নম্বর এক রেখে কানেকশন বদল করে নিচ্ছেন। বিএসএনএলের জন্য যা শাপে বর। এই কানেকশন বদলের ধূম কোথাও কোথাও ২ থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিএসএনএলের এই প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে খুব বড় একটা বিষয়। কিন্তু তারপরেও একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। নতুন গ্রাহক যারা আসছেন, সেই সংখ্যাটা তো নেহাত কম নয়। আর ভবিষ্যতেও অনেকটা বাড়বে। কিন্তু সেই সকল গ্রাহকদের ধরে রাখার মত ক্ষমতা কি বিএসএনএল দেখাতে পারবে? অনিশ্চয়তার এই প্রশ্ন এখন আড়ালে আবডালে উঠলেও বিএসএনএল এই বিষয়ে দারুণ কনফিডেন্ট। কেন সেটাই বলছি।
দেশের আদি অকৃত্রিম একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল। যে ভারতে টেলিকম সেক্টরের কিং মেকার ছিল। তাকেই জিও, এয়ারটেলের মত বেসরকারি টেলিকম সংস্থার দৌরাত্ম্যে ভিক্ষের থালা হাতে নিয়ে বসতে হয়। প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে পড়তে একেবারে শেষ বিন্দুতে এসে ঠেকেছিল বিএসএনএলের অবস্থা। যখন বিএসএনএল প্রায় মৃতপ্রায় সেই মুহূর্তে বিএসএনএলের পাশে এসে দাঁড়ায় টিসিএস। আর কথাতেই আছে, টাটা এমন একটা বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড, সে যেখানে হাত দেয় ভারতবাসীর কাছে সেটাই পরশপাথরের সামিল হয়ে যায়। বিএসএনএলের ক্ষেত্রেও সেটাই হল। টিসিএস পরশপাথর হয়ে ধরা দিতেই দেশ জুড়ে ব্যাপক ট্রেন্ড চালু হয়ে গেল। তারপরই বিএসএনএল নিজের হারানো মুকুট ফিরে পেতে চলেছে। জানা যাচ্ছে, শুধুমাত্র বাংলাতেই প্রথম দশ দিনে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ বিএসএনএল কানেকশন নিচ্ছেন। তার মধ্যে শুধু কলকাতায় সংখ্যাটা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১৬ হাজার। গত ১০ দিনে যে হারে বিএসএনএল কানেকশন দিচ্ছে, তাতে আগের তুলনায় সংখ্যাটা যেন ৫-৬ গুণ বেশি বেড়ে গিয়েছে। তাঁরা অনেকেই শুধু নম্বরটা এক রাখছেন। বদলে দিচ্ছেন নেটওয়ার্ক। শুধু বাংলাতেই গত ১০ দিনে ১৩ হাজারের বেশি মানুষ বিএসএনএল কানেকশন নিয়েছেন যারা নম্বর পাল্টান নি। আবার সবথেকে মজার কথা কী জানেন? তাঁদের অধিকাংশ জিও ছেড়ে বিএসএনএলে আস্থা রাখছেন। তারপরেই উঠছে প্রশ্ন। এতো গ্রাহক যে বিপুল মাত্রায় আসছে এবং ভবিষ্যতেও আসবে, তারপর কি সেই গ্রাহক ধরে রাখার মত ক্ষমতা বিএসএনএলের আছে?
বিএসএনএল সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রথম কথা ৪জি আনার দৌড়ে বিএসএনএল পিছিয়ে রয়েছে সেটা ঠিক। কিন্তু বিএসএনএল এমন একটা সময়ে ঘুরে দাঁড়াতে চলেছে যখন টেলিকম সেক্টরে মূল্যবৃদ্ধির চাপে পড়েই সাধারণ মানুষ কিছুটা বাধ্য হতে হচ্ছিল জিও, এয়ারটেলের মত বেসরকারি সংস্থাগুলোর কানেকশনকে ধরে রাখার। বিএসএনএলের জন্য এই সময়টা খুব মূল্যবান। তাই দেরি হলেও রিচার্জ ট্যারিফ এতটাই কম রাখা হচ্ছে যে বিএসএনএল নিজের হারানো বিশ্বাস ফেরত পাচ্ছে সাধারণ মানুষের সৌজন্যে। তারপরই উঠছে প্রশ্ন। এখন এতো গ্রাহক। ভবিষ্যতেও গ্রাহক সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। সেই পরিকাঠামো বিএসএনএল সামলাতে পারবে তো?
সংস্থার তরফ থেকে বলা হচ্ছে সম্ভব। কারণ বিএসএনএলের পাশে রয়েছে টিসিএস মানে টাটা। বিএসএনএলের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, দেশ যতই এখন ৫জি বা ৬জি-র দিকে এগিয়ে যাক দেশের বৃহৎ অংশের মানুষ এখনো ৪জি-তেই বিশ্বাস রাখছেন। তাই টিসিএসের প্রযুক্তিগত সহায়তা কোনভাবেই বিএসএনএলকে পিছিয়ে পড়তে দেবে না। বরং বেসরকারি সংস্থাগুলোর এই ইঁদুর দৌড়ে কার্যত এগিয়ে থাকবে বিএসএনএল। রীতিমত টেক্কা দেবে জিও, এয়ারটেল থেকে। গ্রাহকদের জন্য বিএসএনএল নিয়ে আসছে হেল্প ডেস্ক। যেখান থেকে গ্রাহকরা সব তথ্য একসঙ্গে পেয়ে যেতে পারবেন। সবমিলিয়ে ৪জি পরিষেবাকে টিসিএসের হাত ধরে এতো উন্নত করতে চাইছে বিএসএনএল যে জিও, এয়ারটেলকে পিছনে ফেলে দিতে খুব একটা বেশি সময় লাগবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ