Daily
এ যেন পিতাপুত্রের লড়াই। তবে এই লড়াইতে দুঃখের থেকে আনন্দই থাকে বেশি। লড়াই বাবু কার্ত্তিক ও বুড়ো শিবের মধ্যে। তবে এই লড়াইকে সাধারণ মানুষ বলে থাকেন আত্মিক লড়াই। আর এই আত্মিক লড়াইকে কেন্দ্র করেই নতুন করে গড়ে ওঠে জেলার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। লাভবান ক্রেতা-বিক্রেতা যেমন, লাভবান তেমন পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শিল্পীকুশলীরাও।
মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের বেলডাঙা। যেখানে কার্ত্তিক পুজোর পাশাপাশি হয় ভৈরবের পুজো। আর তাই দেখতে ঢল নামে দর্শনার্থীদের। গোটা শহর জুড়ে যেমন ৪০-৪৫টি কার্ত্তিক পুজো হয় তেমনি ভৈরব পুজো হয় রমরমিয়ে। বিসর্জনের দিন শুর হয় কার্তিকের শোভাযাত্রার লড়াই। সেই লড়াইকে কার্তিক লড়াই, বলে আসছেন বেলডাঙাবাসী। তবে এর মধ্যে যেমন অন্যতম হল বেনেপাড়ার বাবু কার্তিকের পুজো, তেমনি অন্যদিকে বাথানপুরের শিব। ২২ ফুটের এই কার্তিকের বিশেষত্ব কী? শুনে নেওয়া যাক।
একদিকে যখন বাবু কার্ত্তিক পুজোর উন্মাদনা অনেকগুন বাড়িয়ে দেয় তখন অন্যদিকে এই উন্মাদনায় জ্বালানি দেয় বেলডাঙা পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বড়বাথান এলাকায় বিশাল আকৃতির ভৈরব পুজো। শতাব্দীপ্রাচীন এই পুজো একটা সময় বুড়ো শিব নামেই প্রচলিত ছিল। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন সেই বুড়ো শিব ভৈরবের রূপ নিয়েছে।
দুর্গাপুজো, কালীপুজো মিটতেই ভৈরব পুজোকে কেন্দ্র করে মেতে উঠতে শুরু করেছে বহরমপুরবাসী। বর্তমানে বহরমপুর শহরে একাধিক ভৈরব পুজো হলেও খাগড়াঘাট শ্মশান সংলগ্ন ভৈরবতলার ভৈরবপুজো সবচেয়ে প্রাচীন। তবে করোনার সময় এই পুজো তার জাঁকজমক হারিয়েছে। যে কারণে পুজোকে কেন্দ্র করে যে বিপুল অর্থনীতি তৈরি হয়, সেই অর্থনীতিতেও নেমেছে ভাটা।
তবু কমেনি উন্মাদনা। ভৈরব-কার্তিকের লড়াই যেন গোটা বহরমপুরের নজর কেড়ে নেয়। দর্শনার্থীদের মধ্যে এই দুই পুজো নিয়ে তৈরি হয় যথেষ্ট উন্মাদনা। মানুষের বিশ্বাস যেন এই দুই পুজোর মধ্যে অনেকটাই মেলবন্ধন করিয়ে দেয়। তৈরি হয় বিশ্বাস। একইসঙ্গে এই সময় চাঙ্গা থাকে অর্থনীতি। পুজোর সময় গোটা বহরমপুর জুড়ে যে বিপুল পরিমাণ বেচাকেনা হয় সেটাই জানিয়ে দেয় যে দেবতা শুধু মানুষের বিশ্বাসকেই নয়, অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করে।
কুশল শরিফ
বহরমপুর