Agriculture news
চলতি মরশুমে বৃষ্টির ঘাটতি ভালোরকম রয়েছে। ফলে ভালোরকম মার খাচ্ছে পান চাষ। সেই ছবি ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকে। কেন পান চাষে ক্ষতি হচ্ছে সেটাই খতিয়ে দেখতে গেছিলেন বিজনেস প্রাইম নিউজের প্রতিনিধি। ছবিটা কতটা পরিষ্কার হল, সেটাই বলব আপনাদের।
প্রকৃতির বিরূপ এবং খামখেয়ালি মনোভাবের জন্য ক্ষতির বহর বাড়ছে পান চাষিদের। ফলে তাদের ভাগ্যে ঝুলছে খাঁড়া। কারণ বৃষ্টির ভালোরকম ঘাটতি দেখা দেবার কারণে ক্রমশই ছোট হয়ে আসছে পান পাতার আকার। দেখা দিচ্ছে রোগপোকার আক্রমণ। সেই বিরূপ প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে পানের উৎপাদনে। ইসলামপুর ব্লকের শ্রীকৃষ্ণপুর, চোপড়াঝাড় এবং গুঞ্জরিয়া এলাকায় ভালো রকম পান চাষ হয়ে থাকে। প্রায় ৫০০-র কাছাকাছি পরিবারের জীবন এই পান চাষের ওপর নির্ভরশীল। চাষিরা বলছেন, প্রকৃতির খেয়ালখুশি মর্জির জন্যই খেসারত দিতে হচ্ছে পান চাষিদের। কখনো খুব ঠাণ্ডা, কখনো জলের ক্রাইসিস, চরম বৃষ্টির অভাব- আর এই সব মিলিয়ে এখন পান চাষিদের অবস্থা যায় যায়। তেমনই একজন পান চাষি হলেন ইসলামপুরের জীবন মোড়ের পান চাষি গোপাল দত্ত। ৩০ বছর ধরে পান চাষ করছেন। কিন্তু এবারে যেন বড় দুর্ভোগ। বৃষ্টির অভাবে পান পাতার আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। মরে যাচ্ছে গাছ। আক্রমণ হচ্ছে সাদা মাছির। স্যালো চালিয়ে জলসেচ দেবার কাজ করা হলেও লাভ হচ্ছে না। লাল হয়ে যাচ্ছে পান পাতা। সুতরাং বৃষ্টি ভালোরকম না-হলে ক্ষতির বহর যে বাড়বে আরও…
পান চাষে যে প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে, সেটা কার্যত মেনে নিয়েছেন ইসলাপুর মহকুমা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক অনীক মজুমদার। তিনি নিজেও বলছেন যে দিনে এবং রাতে তাপমাত্রার ব্যপক একটা ফারাক দেখা যাচ্ছে। ফলে পাতায় ধরা পড়ছে দাগ। তার জন্য মাঝেমধ্যে ছত্রাকনাশকের ব্যবহার করতে হবে বলে জানাচ্ছেন এই আধিকারিক। একইসঙ্গে তিনি বলছেন, পুরাতন বরজগুলিতে পোকার আক্রমণের আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে। তাই এই সময়ে দাঁড়িয়ে ওষুধের ব্যবহার এবং নিত্য পরিচর্যার প্রয়োজন রয়েছে। তবে পান চাষ যেহেতু এখানকার মুখ্য চাষ নয়, তাই দফতর থেকে আলাদা করে কর্মসূচির ব্যবস্থা করা হয়নি। কিন্তু চাষিরা যোগাযোগ করলে বরজের জন্য নেট দিয়ে শেডের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত বললেন অনীক মজুমদার।
চাষিদের বক্তব্য ইসলামপুর ব্লকে যে পান উৎপাদিত হয় সেটা কিছুটা মোটা হয়। এই পানের ব্যপক পরিমাণ চাহিদা রয়েছে বিহারে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ইসলামপুর এবং ইসলামপুর সংলগ্ন এলাকায় এই মোটা পানের চাহিদা একেবারে নেই। তাই যে কারণে ইসলামপুর থেকে অধিকাংশ পান চলে যায় বিহার সংলগ্ন এলাকায়। তবে এখন পান চাষিদের জন্য খুব খারাপ খবর। আর তাই দফতরের পক্ষ থেকে পান চাষিদের জন্য সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এখন পান চাষিদের ভাগ্য কত তাড়াতাড়ি ঘুরে দাঁড়ায় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন পান চাষিরা।
অনুপ জয়সোয়াল
উত্তর দিনাজপুর