Story
বাংলায় আসবে বিনিয়োগ। তৈরি হবে একের পর এক শিল্প। তৈরি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ। সবমিলিয়ে বাংলায় আসবে শিল্পের জোয়ার। আপাতত এই লক্ষ্যেই ময়দানে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর শিল্পের জোয়ার তখনই হবে যখন শুধু দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরাই নন। বিদেশের প্রথম সারির সংস্থাগুলিও বাংলায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাবে। কিন্তু তার জন্য চাই ঠিকঠাক পরিকাঠামো। আর এই বিষয়টাকে মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন আগামী এক বছরের মধ্যে রাজ্যে পাঁচটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করতে।
পশ্চিমবঙ্গ বললেই প্রথমে যেটা মাথায় আসে, সেটা হল এই রাজ্যটি কৃষিকেন্দ্রিক অর্থনীতির উপরেই বেশি নির্ভরশীল। কিন্তু এখন বদলেছে সময়। শুধু কৃষিকাজ নয়। রাজ্যে ব্যাপক পরিমাণে শিল্প আসুক। এটাও চাইছেন বাংলার সাধারণ মানুষ। আর তাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করেই শিল্প সম্ভাবনাময় বাংলাকে তুলে ধরতে চাইছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। যে কারণে প্রয়োজন পড়ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে তৈরি করা হোক এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কগুলি। এই নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এমপাওয়ারমেন্ট কমিটির সঙ্গে বৈঠকও সেরেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী যে পাঁচটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করতে চাইছেন তার মধ্যে তিনটি হবে দক্ষিণবঙ্গে। আর দুটি উত্তরবঙ্গে। বোলপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, আলিপুরদুয়ারের ইথেলবাড়ি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এবং জয়গাঁও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। এ তো গেল চারটি। এছাড়াও আরেকটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করা হবে সিঙ্গুরে।
ভাবছেন, যে সিঙ্গুরে বাম আমলে টাটা কার ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট তৈরি করতে চেয়েছিল এবং যার বিরোধিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। আজ সেই সিঙ্গুরেই তৈরি হবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক! সিঙ্গুরের বিষয়টা একটু পরে বলছি তার আগে এতো দ্রুত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরির কারণটা আরেকটু ক্লিয়ার করা যাক।
গত দু’বছর করোনার জন্য বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনকে স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছিল রাজ্য। প্যানডেমিকের ধাক্কায় প্রভাব পড়ে বাংলার অর্থনীতিতে। তাই এই বছরে শিল্পে ভালোরকম গতি এনে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, আসছে এপ্রিল মাসে এই সম্মেলন করতে চলেছে বাংলা। আর এই আগামী বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে পারে ইতালি, প্যারাগুয়ে, নেদারল্যান্ড, জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকা, স্লোভেনিয়ার মত ৩০টি দেশ। এই পার্কগুলিতে তৈরি করা হবে প্রশাসনিক কার্যালয়। তৈরি করা হবে রাস্তা এবং জল সরবরাহের পরিকাঠামো। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কাজও শুরু করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র শিল্প নিগম। তবে সিঙ্গুরের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কটি হতে চলেছে বাকিগুলোর থেকে একটু আলাদা। এই পার্কে থাকবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প। ১১.৮ একর জমির উপরে তৈরি এই পার্কে সিঙ্গুরের কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল বিক্রিও করতে পারবেন। ফলে একদিক থেকে ব্যাপক লাভবান হবেন তাঁরা।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার দিকটা অনেকটাই বাড়িয়ে তুলবে। তৈরি হবে কয়েক হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ। শিল্পই যে ভবিষ্যৎ। এই আপ্তবাক্যটা বর্তমান সরকার খুব ভালোভাবেই জানেন। আর তাতেই আশা করা যায় বাংলায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি হওয়া মানে, শিল্প আর মুখ ফিরিয়ে থাকবে না বাংলা থেকে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ