Daily
স্কুল পড়ুয়াদের মুখে ‘বাজল ছুটির ঘণ্টা’ আর হাসি চওড়া করে না। বরং দীর্ঘ দেড় বছর পর আজ আবার বেজে উঠল স্কুলের ঘণ্টা। করোনার প্রকোপ এড়াতে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। গৃহবন্দি ছাত্রছাত্রিদের জন্য চালু হয়েছিল অনলাইন পঠনপাঠন। এবার ভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় আজ মঙ্গলবার থেকেই রাজ্য সরকারের নির্দেশে খুলে দেওয়া হল স্কুলগুলি। আর তাতেই রীতিমত উচ্ছ্বসিত ছাত্রছাত্রীরা। আবারো ব্যস্ততা ফিরে এলো স্কুল প্রাঙ্গনগুলিতে। ঠিক কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলগুলি? করোনা বিধি মেনে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখো করার জন্য কী কী পদক্ষেপ তারা নিয়েছে? আর ছাত্রছাত্রীরাই বা এতদিন পর স্কুলে আসায় তাঁদের মধ্যে কতটা উচ্ছ্বাস ধরা পড়ল? এই গোটা ছবিটাই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তুলে ধরলেন বিজনেস প্রাইম নিউজের প্রতিনিধিরা।
স্কুলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসা শুরু করেছে ছাত্রছাত্রীরা। স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে একাধিক ব্যবস্থা।
স্কুলে আসা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দেখা গেল প্রবল উৎসাহ আর উদ্দীপনা। সেই ছবি ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলে।
কোভিড বিধি মেনেই দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুল খুলেছে।স্যানিটাইজেশন থার্মাল চেকিং করে তারপরেই স্কুলে ঢুকতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। মনোবল বাড়াতে কোন স্কুলের পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয় চকলেট ও পেন। দীর্ঘদিন বাদে স্কুলে এসে খুশি ছাত্রছাত্রীরা
আলিপুরদুয়ার জেলার বারোবিশা বালিকা বিদ্যালয়ে অভিনব ভাবে ছাত্রীদের বরণ করে নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা। সকল ছাত্রীদের ফুলের তোড়া, চকলেট ও কলম দিয়ে বরণ করা হয়। বিদ্যালয়ে প্রবেশের মুখে থার্মাল গান দিয়ে ছাত্রীদের তাপমাত্রা মাপা হয় এবং সকলকে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে হয়। স্কুল খোলায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেল খুশি।
স্কুল খোলায় খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন তাঁরাও।
স্কুলগুলি পুরনো ছন্দে ফিরে আসার কারণে ছাত্রছাত্রীদের হাসিখুশির ছবিটা ধরা পড়ল পূর্ব মেদিনীপুরে। কোলা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে সকল নির্দেশিকা মেনে স্কুল খোলায় ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যেও সেই উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গিয়েছে। মুখে মাস্ক পরে ক্লাস রুমে ঢোকা এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এছাড়া একাধিক নির্দেশিকা মেনেও স্কুল খোলায় খুশি ছাত্র-ছাত্রীরা।
বনগাঁর ছবিতেও ধরা পড়ল সেই একই ব্যস্ততা। তবে এখানে ছাত্রদের উপস্থিতি একটু কমই দেখা গেল। তবুও ক্লাস করাচ্ছেন স্কুল শিক্ষকেরা। বেলা সাড়ে নটা থেকে স্কুলের প্রবেশ শুরু হয় ছাত্রদের। দশটা থেকে শুরু হয় নবম শ্রেণী ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস। বেলা এগারটা থেকে ক্লাস শুরু হয় দ্বাদশ এবং দশম শ্রেণীর।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। এখানেও লক্ষ্য করা গেল সেই একই ছবি। শুরু হল পড়াশুনো। ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষকশিক্ষিকা প্রত্যেকেই খুশি। তবে কঠোর নিরাপত্তাবিধি মানা হয়েছে গোটা স্কুল জুড়েই। সকাল থেকেই সমস্ত স্কুলগুলির সামনে দেখা গিয়েছে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের ভিড়। স্কুলে করোনাবিধি মেনে চলার যাবতীয় ছবিটা ধরা পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্কুলগুলোতে।
স্কুল খোলার সেই একই ছবি ধরা পড়ল পূর্ব বর্ধমানে। মানা হচ্ছে সকল রকমের করোনা বিধি। বর্ধমান টাউন স্কুল, বর্ধমান মিউনিসিপাল হাইস্কুল, দুবরাজদীঘি হাই স্কুলের ছবি ধরা পড়ল আমাদের ক্যামেরায়। কী বলছেন জেলার স্কুল পড়ুয়ারা? শুনে নেওয়া যাক তাঁদের মুখ থেকেই।
জঙ্গলমহলেও চালু হয়ে গেল স্কুল। শুরু হয়ে গেল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন। খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীরা। তবে স্কুল, কলেজগুলিতে পড়ুয়াদের জন্য নির্দেশিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ মেনে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল ও কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। মানা হচ্ছে সকল করোনা বিধি।
ছাত্রছাত্রীদের উচ্ছ্বাসে কমতি নেই। এখানেও ধরা পড়ল সেই একই আবেগ। শিক্ষক শিক্ষিকারাও একদিকে যেমন খুশি তেমনি অন্যদিকে শিক্ষা দফতরের সকল সচেতনতা মানতে তারাও যথেষ্ট উদ্যোগী। সেই একটুকরো ছবি ধরা পড়ল আমাদের ক্যামেরায়।
গোটা রাজ্য জুড়েই আজ স্কুলগুলিতে রয়েছে সাজো সাজো রব। দীর্ঘ দেড় বছর পর করোনার আবহেই স্কুল খুলে যাওয়ায় অফলাইন পঠনপাঠনের মাধ্যমেই ছন্দে ফিরতে শুরু করল সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। আশা করা যায়, করোনার দাপট আর বৃদ্ধি পাবেনা। বন্ধ হবে না স্কুলের গেট। দীর্ঘমেয়াদী ছুটির ঘণ্টাও আর বাজবে না।
অনুপ জয়সোয়াল, অরূপ পোদ্দার, অভিজিৎ চক্রবর্তী, প্রসূন ব্যানার্জী, দেবস্মিতা মণ্ডল, দীপান্বিতা দাস পত্রলেখা বসু চন্দ্র, অরূপ ঘোষ, বিক্রম লাহা
উত্তর দিনাজপুর, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, বারাসাত