Daily
১৯৯৯ সাল থেকে পূর্ব ভারতে আছড়ে পড়েছে ৬টি সুপার সাইক্লোন। শুধু ইয়াস আসার কারণেই বাংলাকে ২.৭৬ বিলিয়ন ডলার আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। আর বাংলা, উড়িষ্যা এবং ঝাড়খণ্ড- ইয়াসের কারণে এই তিনটি রাজ্যে আর্থিক ক্ষতির অঙ্কটা পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় ৭-৮ বিলিয়ন ডলারে। এবার আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের পালা। তাও আবার কালীপুজোর উৎসব আবহেই। এবারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। মনে করা হচ্ছে, পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে আগামী ২২ অক্টোবর পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। আর ঘূর্ণিঝড় আসা মানেই তো বহু মানুষের প্রমাদ গোনার দিন শুরু হয়ে যায়। স্পেশ্যালি উপকূলবর্তী মানুষদের। অতীতের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সাক্ষী এই সকল এলাকার মানুষজন। কারণ, ঘূর্ণিঝড় কখনো কাড়ে প্রাণ, তো কখনো ভেঙে দেয় বাসস্থান। তছনছ হয়ে যায় গোটা এলাকা। তবে কি এবারও সেই ভয়াবহ ছবিটাই দেখতে চলেছে বাংলা?
আবহবিদরা জানিয়েছেন, উড়িষ্যা এবং গাঙ্গেয় বাংলার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে একটি অক্ষরেখা। তার প্রভাবে বৃষ্টি নামতে পারে দুই চব্বিশ পরগণা সহ পূর্ব মেদিনীপুরে। এদিকে আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে। যা ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং পরিণত হবে নিম্নচাপে। সেই নিম্নচাপ মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে আরও শক্তি সঞ্চয় করে পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে। সেই ঘূর্ণিঝড় হল সিত্রাং। নামটি থাইল্যান্ডের দেওয়া। তবে ইন্টারনেটে বলা হচ্ছে, সিত্রাং শব্দটি নাকি আবার ভিয়েতনামের। এই সিত্রাং শব্দের অর্থ হল পাতা। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবার পর কোথায় আছড়ে পড়তে পারে? সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হয়নি হাওয়া অফিস। উড়িষ্যা থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত উপকূলবর্তী যে-কোন এলাকাতেই আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।
গেল ইয়াসে শুধুমাত্র কলকাতার জিডিপি ধাক্কা খেয়েছিল ১.৭% মতন। মূলত, পাওয়ার, এয়ারলাইন্স, রেলওয়ে, টেলিকম সেক্টর দেখেছিল ভালোরকম ধস। কৃষিকাজে আর্থিক ক্ষতি পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় ২ হাজার কোটি টাকায়। ক্ষতি হয়েছিল ছোট ছোট ব্যবসার। তবে কি এবার পালা সিত্রাংয়ের? মনে করা হচ্ছে, এর ফলে আবারও ভাটা নামতে পারে কালীপুজোর আনন্দে। ধাক্কা খেতে পারে পুজো আবহে চলা ব্যবসা-বাণিজ্য। মনে করা হচ্ছে, সিত্রাং যদি বাংলার কাছাকাছি দিয়ে বয়ে যায়, সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে সুন্দরবনে। ব্যপক ক্ষতি হতে পারে কৃষিকাজে। বাংলার ক্ষতি মানে বাংলার অর্থনীতির ক্ষতি। সেই ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে হবে রাজ্য সরকারকে। এখন ঘূর্ণিঝড় আসার অনেক আগে থেকেই প্রশাসনিক তৎপরতা চোখে পড়ে ভালোরকম। উপকূলবর্তী মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা খুব ভালোভাবেই করা হয়। প্রাণ এবং বাসস্থান- তার সঙ্গে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, এই সবকিছু যেমন ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আসে। তেমনি বহু মানুষকে আর্থিকভাবে সর্বসান্ত করে দেয় একেকটি ঘূর্ণিঝড়। এখন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং কোথায় আছড়ে পড়বে আর পুজো আবহে বিপর্যয় আনতে পারে কোন এলাকায়? আপাতত সেদিকেই প্রমাদ গুনছেন বঙ্গবাসী।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ