Market
২০০৮ থেকে ২০২১। মাত্র ১৩ বছরেই জীর্ণ হয়ে পড়েছে বারাসাতের একমাত্র ওভারব্রিজটি।
বাম আমলে তৈরি হওয়া এই ব্রিজটিতে একাধিক জায়গায় বিশেষ করে পিলারগুলোতে ফাটল দেখা দেওয়ায় যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা। নবান্নের পক্ষ থেকে জেলাশাসকের দপ্তরে অর্থ বরাদ্দ করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ব্রিজ মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর অনুযায়ী, পুজোর আগেই শুরু হবে সেই মেরামতের কাজ। আর বিপত্তিটা ঠিক এখানেই।
বারাসাতে ১২ নম্বর রেল গেটের এপার ওপার মিলিয়ে প্রায় ৫০০ হকার ব্রিজের নিচে দোকান-পসরা সাজিয়ে সারাবছর ব্যবসা করেন। এখন পুজোর আগে ব্রিজ মেরামতের কাজ শুরু হলে জীবন-জীবিকায় টান পড়বে হকার পরিবারগুলোতে। এমনিতেই করোনা আবহে বেচাকেনা গিয়েছে কমে। সেখানে মেরামতির কাজ শুরু হলে ব্যবসা করে সংসার চালানো মুশকিল হবে।
পুরসভার পক্ষ থেকে হকারদের ইতিমধ্যে বোঝানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। হকাররা নিজেদের জীবনের স্বার্থে পুরসভার সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে ঠিক করেছেন।
রাজ্য সরকার বারাসাতের একমাত্র ওভার ব্রিজটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইতিমধ্যেই ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তাই কাজও শুরু হবে খুব তাড়াতাড়ি।
লকডাউনে যখন অধিকাংশ মানুষের হাতে কাজ চলে গিয়েছে। বন্ধ হয়েছে একের পর এক কারখানা। ঠিক তখন এই ওভারব্রিজের নিচে রেজিস্টার্ড হকারদের পাশাপাশি বহু নন- রেজিস্টার্ড হকাররাও এখানে ব্যবসা করে কোনমতে সংসার চালাচ্ছেন। তাই হকাররা সবরকম ভাবে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি তাপস দাসগুপ্ত।
ব্রিজের ভগ্নদশা তার উপর রাতের অন্ধকারে ওভারলোডিং নিয়ে লরির নিত্য যাতায়াত এই বৃষ্টিতে আরো দুর্বল করে দিয়েছে বলেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। তবে পুজোর আগে প্রশাসন কাজ শুরু করতে চায় পিলার ধরে ধরে। সেক্ষেত্রে হকারদের জীবনে ও জীবিকা যে আবারো সংকট নেমে আসতে চলেছে সে বিষয়ে তারা মোটামুটি একমত। যদিও পুরসভার পক্ষ থেকে হকারদের বিকল্প জায়গা দেওয়ার কথা ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। সেই বিকল্প জায়গা নিয়েই আবার সন্দিহান কয়েকজন হকার।
কলোনি মোড় থেকে চাপাডালি মোড় পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ এই একমাত্র ব্রিজ যেটা যুক্ত করছে পূর্ব ও পশ্চিম বারাসাতকে। যুক্ত করছে দুই বারাসাতের হকারদের জীবন জীবিকাকে।
বিক্রম লাহা, উত্তর ২৪ পরগনা