একেই বলে কারুর পৌষ মাস তো কারুর সর্বনাশ। বারাসাতের ২ নং ব্লক। এখানে অর্থনীতির অধিকাংশটাই নির্ভরশীল মৎস্যচাষের উপর। ভেরির পর ভেরি জুড়ে মাছ চাষ হয় এখানে। কিন্তু নিম্নচাপের অতি বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে ভেরি। প্রচুর মাছ বেরিয়ে এসেছে খাল দিয়ে। খবরটা ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। তারপরেই রীতিমত হুড়োহুড়ি।

কেউ জাল ছুঁড়ছেন ব্রিজের ওপর থেকে। কেউ বা নেমে পড়েছেন এক বুক জলে। আর জাল ফেলতেই উঠে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ। কারুর ভাগ্যে জুটছে ৭ কেজি, কারুর ভাগ্যে ১০ কেজি তো কেউ মাত্র দু’ঘণ্টার পরিশ্রমেই জালে তুলেছেন একেবারে ২০ কেজি মাছ।

শুধু স্থানীয় মানুষরাই নন। মাছ ধরার খবর পেয়ে দূরদূরান্ত থেকে গাড়ি করে মানুষ এসে জড়ো হচ্ছেন এখানে। মাছ ধরার হিড়িক কার্যত নজর কেড়েছে অনেকেরই। কয়েক শো মানুষের জমায়েত হওয়ায় রীতিমত যানজট তৈরি হয় রাজারহাট-আমিনপুর সড়কে। ভেরি মালিক এবং মৎস্যচাষিদের যে ক্ষতি হচ্ছে, সেকথা স্বীকারও করছেন অনেকে।

মৎস্যচাষিদের এই ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির কথা কানে গিয়েছে মৎস্য দফতরেও। বারাসাতের ২ নং ব্লকের ফিশারি এক্সটেনশন অফিসার দীননাথ কর্মকার মৎস্যচাষিদের আর্থিকভাবে সাহায্যের জন্য ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

মাছ ধরার পর কেউ মাছ নিয়ে যাবেন বাড়িতে। পরিবারের সকলের মধ্যে ভাগ করে দেবেন। কেউ আবার বেঁচে থাকা মাছ বিক্রি করে দেবেন বাজারে। অনেকে তো আবার ৫০-১০০ টাকা কেজিতে মাছ সেখানেই বিক্রি করছেন। পথচলতি মানুষরাও দাঁড়িয়ে কম টাকায় কিনে নিচ্ছেন সেই মাছ। নিম্নচাপের অতি বৃষ্টি যেমন একদিকে কারুর জন্য লাভের দিশা খুঁজে দিচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে মৎস্যচাষিদের লোকসানের অঙ্ক অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন মৎস্যদফতর কিভাবে এই সকল ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের পাশে এসে দাঁড়ায়, সেটাই দেখার।

বিক্রম লাহা
উত্তর ২৪ পরগনা