Story
দেশের মানচিত্রে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ হিসেবে বেড়ি বাওড়ের জায়গা থাকলেও ট্যুরিজমের মানচিত্র থেকে উধাও হয়েছে সাড়ে ৯ কিলোমিটার লম্বা এই জলাশয়। বিজনেস প্রাইম নিউজের ক্যামেরায় আগেই এক্সক্লুসিভলি তুলে ধরা হয় বেড়ি বাওড়ের পর্যটনকেন্দ্রিক আর্থিক সম্ভাবনার দিকটি। তারপরেই গ্রামবাসীদের মধ্যে ছোট ছোট সেমিনার করে রাজ্য সরকারের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন এখানকার স্থানীয় মানুষরা।
সম্প্রতি ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জৈব চাষ, সঠিক পুষ্টিতে সুষম খাদ্যাভ্যাস’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হল গাইঘাটার বেড়ী গোপালপুর হাইস্কুলে। যেখানে প্রায় ২০০ জন কৃষক এবং বিভিন্ন পেশায় সফল ব্যক্তিত্বদের নিয়ে এই সেমিনার আয়োজন করে বেঙ্গল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এবং স্থানীয় রামনগর কৃষক সংঘ। সকালে বৃক্ষরোপণ জাতীয় পতাকা উত্তোলন ছাড়াও নারায়ন চন্দ্র মন্ডল নামক স্থানীয় বয়স্ক কৃষকের প্রতীকী পূজা করা হয়। তার হাতে তুলে দেওয়া হয় টোকা, টুপি, লুঙ্গি, গেঞ্জি গামছা সহ বিভিন্ন উপহার।
এই সেমিনারে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের ফিশারিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী অধ্যক্ষ ড: অর্চন কান্তি দাস কৃষিবিষয়ক গাইঘাটা কৃষি দপ্তরের অন্যতম আধিকারিক সুবীর দাস আন্তর্জাতিক পুষ্টিবিশেষজ্ঞ গণেশ মণ্ডল প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বামী স্বরূপানন্দ মহারাজ, শিক্ষারত্ন অসীম বিশ্বাস, বেড়ী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ডক্টর শ্যামল কুমার বালা, কাশীনাথ সুমন প্রমুখ। এই গোটা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বেডসের রাজ্য সম্পাদক শাহজাহান মন্ডল ও বিজ্ঞান শিক্ষক ডঃ প্রসন্ন সাহা। যেখানে বাউল সুন্দরী বেরি পাঁচপোতা পর্যটন শিল্প এবং সম্ভাবনা নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়।
বেড়ির বাওড়ের স্থানীয় অর্থনীতি যে এক ধাক্কায় কয়েক গুণ বাড়তে পারে শুধুমাত্র পর্যটনের খাতিরে সেই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ড: প্রসন্ন সাহা।
বেড়ির বাওড়ের সম্ভাবনার দিকটি নিয়ে কথা বললেন ড: অর্চন কান্তি দাস।
এই বাওড়কে রক্ষা করছেন স্বদেশ খাঁর মত বেশ কয়েকজন পাহাড়াদার। যাদের নজরদারিতে বেড়ি বাওড় একেবারে সুরক্ষিত।
এই গ্রামে পাঁচটা বুথ মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার মানুষ বসবাস। সাড়ে ৯ কিলোমিটার লম্বা, ৩০ থেকে ৫০ ফুট গভীর এবং ৩০০ মিটার চওড়া। ৫০০ একর জমি জলাশয় ঘিরে ছড়িয়ে থাকা ভারতের সবথেকে অবহেলিত অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ আমাদের গ্রাম বাংলার বেড়ীর বাওড়। যার উপর নির্ভর করে পেট চালান ২০০০ এর উপর মৎস্যজীবী পরিবার এবং যাকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার কৃষিজীবী মানুষরা। ডাল লেক যদি কাশ্মীর পর্যটনের অন্যতম সৌন্দর্য হয় তবে বাংলার বেড়ীর বাওড় কোন অংশেই কম যায় না। তাই সরকারের কাছে আপ্রাণ চেষ্টাছ করছেন বাওড়ের স্থায়ী বাসিন্দারা। বিজনেস প্রাইম নিউজের মাধ্যমে পৌঁছতে চাইছেন একেবারে রাজ্য সরকারের কাছে যাতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বেড়ির বাওড় উঠে আসে বাংলার মানচিত্রে আর তাহলেই বদলে যাবে বাওড়ের অর্থনীতির ছবিটা।
অঙ্কিত মুখার্জী
উত্তর ২৪ পরগনা