Daily

বাংলায় শীতের মরশুমে হরেক রকম মেলার সাক্ষী রয়েছি আমরা অনেকেই। কিন্তু তা বলে মুড়িমেলা কি কখনো কোথাও দেখেছেন? হলফ করে বলাই যায় অনেকেই আপনারা দেখেননি এই মুড়ি মেলা।
রাঢ় বঙ্গের জেলা বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার মুড়ি মেলার ইতিহাসটা বহুদিনের। শুধু বহুদিনের নয় রাঢ়বঙ্গের একটা প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মেলা হিসেবে বাংলার ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে কেঞ্জাকুড়ার এই মুড়ি মেলা।
যে মেলার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নারদ মুনির নাম। সেই মেলায় করোনার চোখরাঙানি উপেক্ষা করেও মানুষ যে আসবেন সেটাই তো স্বাভাবিক।
বাঁকুড়ার এক প্রান্ত দিয়ে বয়ে চলা দ্বারকেশ্বর নদের চরে মাঘ মাসের চতুর্থ দিন মাতা সঞ্জীবনী মন্দিরের পাশেই জমে উঠলো এ বছরও ঐতিহ্যবাহী এই মুড়ি মেলা। মুড়ি মেলার জন্য পর্যটকরা কতটা অধীর আগ্রহে বসে থাকেন তা অবশ্য ধরা পরল এই পর্যটক এর গলায়।
কেউ চরের বালি, বাটি করে সরিয়ে ফ্রেশ জল তুলে তাতে মুড়ি ভিজিয়ে খাচ্ছেন কেউ আবার দ্বারকেশ্বর নদীর চরে সপরিবারে গামছা বিছিয়ে চপ মুড়ি সিঙ্গারা সহ মিঠেল রোদ গায়ে মাখতে মাখতে আর ক্যামেরায় সেলফি তুলতে তুলতে খাচ্ছেন ?
দ্বারকেশ্বর নদের এক হাঁটু জলে প্যান্ট জামা গুটিয়ে সবাই যে যার মত নদীর চরে জায়গা খুঁজে নিয়েছেন মুড়ি খাওয়ার জন্য।
দেখুন আজকে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মুড়ি মেলার কিছু কোলাজ শুধুমাত্র বিজনেস প্রাইম নিউজে।
মকর সংক্রান্তির দিন সঞ্জীবনী মন্দিরে কীর্তন দিয়ে শুরু হয়। আর শেষ হয় মাঘ মাসের চতুর্থ দিনে বিশেষ করে আজকে মুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে। অতীতে যারা কীর্তন শুনতে আসতেন তারা দ্বারকেশ্বর নদের জলে মুড়ি ভিজিয়ে খেতেন। লোকশ্রুতি সেই সময় নারদ মুনি এই দ্বারকেশ্বর নদের উপর দিয়ে ঢেকি চড়ে যাওয়ার সময় নাকি মুড়ি ভেজানোর চোচো শব্দে রীতিমত ভয় পেয়েছিলেন। সেই থেকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মাঘ চতুর্থীর এই দিনটাতে দ্বারকেশ্বর নদের চরে জমে ওঠে মুড়ি মেলা। যা আজকের যুগে বিশেষ করে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় পিকনিকের হটস্পট হিসেবে পরিচিত হয়েছে।
আব্দুল হাই, বাঁকুড়া