Trending
২০৩০ সালেই ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির স্বপ্নপূরণ করবে বাংলাদেশ। গ্লোবালি নাইন্থ লারজেস্ট কঞ্জিউমার মার্কেট হবে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি। মত বিশেষজ্ঞদের। বিশ্বজোড়া অর্থনৈতিক ডামাডোলের মধ্যেও বাংলাদেশকে নিয়ে অপ্টিমিস্টিক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞমহল। ৯০-এর দশকেও যে দেশের দারিদ্র্য নিয়ে এত কথা হত, যাকে বটমলেস বাস্কেটের তকমা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল, তাকে নিয়ে এই অপ্টিমিজমের কারণটা কী?
২০০৮ থেকে ২০২৩- ১৩ বছরে ইকনমিক্যাল এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্টে মাইলফলক তৈরি করেছে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু, ঢাকা মেট্রো, বঙ্গবন্ধু টানেল, ইত্যাদি একাধিক প্রোজেক্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজদের প্রমাণ করেছে প্রতি পরোতে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ৪৬০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির একটা দেশ। বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক সাফল্য আজ আকৃষ্ট করছে বিদেশী বিনিয়োগকে। সৌদি আরবের পর এবার ফ্রান্সও জানিয়ে দিয়েছে যে তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের তিনটি প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চলেছে ফ্রান্স। ঋণের অঙ্ক ৩২৪২ কোটি টাকা। মূলত ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট’, ‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন স্যুয়ারেজ প্রজেক্ট ফর নর্থ ক্যাচমেন্ট’ ও ‘ বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন প্রকল্পের জন্য এই ঋণচুক্তি সই হয়। কিন্তু বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক সাফল্যের রহস্যটা কী? কেন বিদেশী ইনভেস্টমেন্টের অন্যতম পছন্দের জায়গা হয়ে উঠছে বাংলাদেশ?
প্রথমত, বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমি। যাকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আমরা ইতিমধ্যেই করেছি। উপরে আই বটনে ক্লিক করে সেটা একবার দেখে আসতে পারেন। বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে একটা দারুন অ্যাডভান্টেজ। দীর্ঘদিনের আলাপ আলোচনায় দাঁড়ি টেনে অবশেষে এই অতল সমুদ্রে তেল এবং গ্যাসের অনুসন্ধানে নামছে বাংলাদেশ। এতে অবশ্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেরও বেশ কিছুটা সায় আছে। বুঝতে পারলেন না তো? দেখুন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অপরিশোধিত তেলের দাম আকাশ-ছুঁয়েছে। ব্যারেল প্রতি ১৭০ ডলার। খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে তো দিনশেষে আর কোন লাভ নেই। তাই অজানা বঙ্গোপসাগরে তেল বা গ্যাস মেলার সম্ভাবনা যখন রয়েছে তখন খোঁজ করে দেখাই যাক। সুতরাংঅবশেষে সেই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলল বাংলাদেশ।
এখানেই শেষ নয়। বাংলাদেশের অতলে লুকিয়ে থাকা খনিজের গল্প বিশ্বের কারও কাছেই অজানা নয়। প্রাকৃতিক গ্যাসের যে বিশাল ভাণ্ডার বাংলাদেশের আছে, তা বাংলাদেশের কাছে একটা মস্ত বড় অ্যাডভান্টেজ তো বটেই। তবে এবার সেই খনিজকে ঘিরে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ তাতে অনেকেই অবাক হয়েছেন। আমদানি নির্ভরতা কমাতে কয়লা খনির খোঁজ চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। কিন্তু তার খোঁজ পাওয়া যে এত সহজ হবে ভাবতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার। মাটির নিচে আড়াই লক্ষ কোটি গুপ্তধনের খোঁজ মিলল বাংলাদেশ। ৯০ মিলিয়ন টন কয়লার খোঁজ বদলে দিতে চলেছে বাংলাদেশের। দিনাজপুরে খোঁজ পাওয়া এই কয়লা বাংলাদেশকে চিন্তামুক্ত করবে আগামী ৩০ বছরের জন্য, বলছে সমীক্ষা।
কিন্তু কথা হচ্ছে এই ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পৌঁছনো কি এতই সহজ? বিশেষজ্ঞরা এটাই বলছেন যে ২০৩০ এর মধ্যে বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি করতে পারবে। আর এক্ষেত্রে শুধুমাত্র টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে আটকে না থেকে ডাইভারসিফিকেশন এবং প্রাইভেটাইজেশনকে এনকারেজ করাটা সাপে বর হয়েছে। দেখুন, চ্যালেঞ্জ থাকবে। থাকাটা স্বাভাবিক। তবে বাংলাদেশ সরকারকে এন্টারপ্রেনারশিপ মেন্টালিটিকে আরও উৎসাহিত করতে হবে। দেশের এত সম্পদ দেখে যদি বিদেশী বিনিয়োগ আসে, তাহলে ভাবুন দেশের মানুষ সেই সম্পদ ব্যবহার করে ঠিক কী করতে পারে। মানুষকে কর্মমুখী করে তোলার এই উদ্যোগটা সরকারকেই নিতে হবে। বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ছুঁতে আর কি কি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে আপনার মনে হয়, জানান কমেন্ট বক্সে। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।