বাংলাদেশের অবস্থা অচল হয়ে পড়ছে। সংরক্ষণ বিরোধীতা করে এখন প্রায় স্তব্ধ বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা সহ দেশের নানা শহরে এখন প্রায় সব কিছু স্তব্ধ। দোকান-বাজার, হাসপাতাল, সংবাদমাধ্যম, জরুরি পরিষেবা সবই প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রতিবাদ চরমে উঠছে। অনেকেই বলছেন নাকি যে, হাসিনাকে গদিচ্যুত করার বীজ রোপণ হয়েছে নাকি এখান থেকেই। ভবিষ্যৎ কোনদিকে এগোবে? এই পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কী বার্তা দিয়েছেন, এই সবকিছুই আপনাদের বলব আজ।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে সংরক্ষণের কথা নিয়ে কার্যত ক্ষোভ জমা হচ্ছিল বাংলাদেশের যুবসমাজের মধ্যে। তবে এবারেই প্রথম নয়। ২০১৮ সালেও ঠিক এই ইস্যুতেই উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ৫৬% সংরক্ষিত। আর সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল ৪৪%। যে ৫৬% সংরক্ষিত ছিল, তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য সংরক্ষণ ছিল ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ছিল ১০ শতাংশ আর বিভিন্ন জেলার জন্য ছিল ১০ শতাংশ এবং জনজাতিদের জন্য ৫% আর প্রতিবন্ধীদের জন্য ১%। কিন্তু ২০১৮ সালে যখন এই সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তখন মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য যে ৩০% সংরক্ষণ ছিল সেটি, নারীদের জন্য যে ১০% ছিল সেটি এবং জেলা ভিত্তিক যে ১০% ছিল সেটি- মোট এই তিনটি সংরক্ষণের বিষয়টা বাতিল করে দেয় হাসিনা সরকার। সেই সময় এই সংরক্ষণ বাতিল করে তখনকার মত আন্দোলনকে প্রশমিত করা গেছিল। তবে পরিস্থিতি ফের বদল হল এই গত কয়েকদিনে। কারণ হাসিনা সরকারের ঐ সংরক্ষণের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে যান মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের মধ্যে কেউ কেউ। তারপর গত ৫ জুন বাংলাদেশের হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে সরকারের নির্দেশ একেবারে অবৈধ। অর্থাৎ সরকারকে সংরক্ষণের বিষয়টা ফিরিয়ে আনতে হবে। তারপরই প্রতিবাদে নামেন বাংলাদেশের ছাত্র, যুব সমাজ। মূলত সংরক্ষণ বিরোধী মঞ্চ এখন জনজাতিদের সংরক্ষণের দাবি তুলেই আন্দোলনকে আরও তীব্র করে তুলছে। অনেকেই মনে করছেন এই আন্দোলনের পিছনে কাজ করছে জামাত-ই-ইসলামিদের মদত। উত্তাল বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে যে, পুলিশের কিয়স্কে চলছে হামলা। ভাঙচুর, কাঁদানে গ্যাস, লাঠি, সাউন্ড গ্রেনেডের ব্যবহার করেন তাঁরা। এই মুহূর্তে রাজধানী ঢাকায় নাকি সেভাবে অন্যান্য গাড়ি চলাচল প্রায় স্তব্ধ। চলছে শুধুমাত্র পুলিশের গাড়ি আর অ্যাম্বুলেন্স। বিক্ষোভকারীদের এই মহাবিক্ষোভের কারণে এখন প্রায় স্তব্ধ হয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকার স্বাভাবিক জনজীবন। ইতিমধ্যে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে যে বাংলাদেশ সরকার এখন কিভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবে সেই উপায় বের করাই এখন একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সতর্কবার্তা। স্পেশ্যালি ভারতীয় নাগরিক এবং পড়ুয়াদের উদ্দ্যেশ্যে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে মোদী সরকার। বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে সেই বার্তা দেওয়াও হয়েছে। বাংলাদেশে যে সকল ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন তাঁদের ঘুরে বেরানোয় নিষেধ করেছে আমাদের বিদেশ মন্ত্রক। একইসঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরনোতেও জারি করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ। ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন এবং চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট এবং খুলনার উপ-হাই কমিশনের ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের বন্ধুদের জানাই, সতর্ক থাকুন। সাবধানে থাকুন। আর সত্যিই কি হাসিনাকে গদিচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল? আপনাদের মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ।

জীবন হোক অর্থবহ