Trending
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন শুধু মনের নয়, ব্যবসার দিক থেকেও এই বন্ধনের গুরুত্ব অনেকটাই। আর পশ্চিমবঙ্গের কথা বললে তো সেই গুরুত্ব অন্য মাত্রা পায়। এদিকে কলকাতা আর ওদিকে ঢাকা- প্রতিদিন দুই বাংলার বহু মানুষের পা পড়ে কর্মসূত্রে। আর শুধু কাজের কথাই বা বলি কেন। কত মানুষ আছেন, যারা ওপার বাংলা থেকে কলকাতায় আসেন চিকিৎসার জন্য। কেউ বা আসেন স্রেফ ঘুরতে। তাই সব মিলিয়ে বলাই যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই বাংলার মানুষের মধ্যে বন্ধন কমছে না, বরং বেড়েই চলেছে। আর সেই বন্ধনের জোরকে আরও একটু শক্ত করল বন্ধন এক্সপ্রেস। গত রবিবার থেকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশের খুলনার মধ্যে বন্ধন এক্সপ্রেস ফের যাতায়াত করতে শুরু করে দিল। উচ্ছ্বসিত দুই বাংলার মানুষই।
গত রবিবার মাত্র ১৯ জন যাত্রী নিয়ে সকাল ৭:১০ মিনিটে কলকাতা স্টেশন থেকে বন্ধন এক্সপ্রেস রওনা দেয় খুলনার উদ্দ্যেশ্যে। খুলনা পৌঁছতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা মতন। কমফর্টেবল এবং নিশ্চিন্দির যাত্রা। তাই খুশির আবেগ ধরা পড়ল বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রীদের মধ্যে। যেমন ফারুখ। বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসেন চিকিৎসার জন্য। সবসময় তো ফ্লাইটে করে আসা সম্ভব নয়। আর সড়কপথে আসতে গেলে সময় লেগে যায় অনেক। ইমিগ্রেশনের জন্য। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই বন্ধন এক্সপ্রেস ফারুকের মতন মানুষদের অনেকটাই সুবিধে করে দিল।
আর শুধু ফারুখ কেন, এমন অনেকেই আছেন যাদের কাছে কলকাতা থেকে খুলনা যাতায়াত করা এখন অনেকটাই সুবিধে হয়ে গেল। বাঁচছে সময়। বাঁচছে পরিশ্রম।
বন্ধন এক্সপ্রেসে দুটো ক্যাটেগরির আসন রয়েছে। যার মধ্যে একটা এগজিকিউটিভ ক্লাসের, অন্যটা চেয়ার কারের। এগজিকিউটিভ ক্লাসের ভাড়া রাখা হয়েছে ১২০০ টাকা মতন। আবার অন্যদিকে চেয়ার কারের ভাড়া রাখা হয়েছে ৮০০ টাকার মতন। তবে ট্রেনে ওঠার আগে প্রতিটি যাত্রীদের ভালো করে চেক করেন বিএসএফের কর্মকর্তারা। মোবাইল, ওয়ালেট, ঘড়ি সবকিছুই আলাদা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে চেকিং চলে। এমনকি ট্রেন ছাড়ার আগে স্নিফার ডগ দিয়ে পুরো ট্রেনে তল্লাশি চালানো হয়। তবে হ্যাঁ। যাত্রীদের অতিরিক্ত মালপত্র বহন করার জন্য আলাদা শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। কোন যাত্রীর কাছে যদি ৩৫ কেজি থেকে ৫০ কেজি পর্যন্ত মাল থাকে সেক্ষেত্রে কেজি প্রতি ২ মার্কিন ডলার অতিরিক্ত ফি দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রথম দিনে যাত্রী সংখ্যা অনেকটা কম থাকলেও, ভবিষ্যতে যে বন্ধন এক্সপ্রেসে যাত্রী সংখ্যা যে অনেকটাই বাড়বে সেটা নিয়ে আশাবাদী পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ম্যানেজার ও জনসংযোগ আধিকারিক হরিনারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়। বন্ধন এক্সপ্রেস নিয়ে কি বললেন, শুনে নেওয়া যাক।
অতিমারির কারণে দু’বছর বন্ধ রাখতে হয়েছিল বন্ধন এক্সপ্রেসকে। অতিমারির ধাক্কা অনেকটা লঘু হয়ে আসার কারণে এই ট্রেন চালু হয়েছে। তবে বন্ধন এক্সপ্রেস চলবে সপ্তাহে দু’দিন- রবিবার এবং বৃহস্পতিবার। সপ্তাহের বাকিদিনগুলোয় যেমন মৈত্রী এক্সপ্রেস যাতায়াত করে তেমনই করবে। দীর্ঘ ২৬ মাস পর বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত দুই বাংলার মানুষ। মনে করা হচ্ছে, এই বন্ধন এক্সপ্রেস দুই বাংলার মানুষের আর্থিক কর্মকাণ্ডের রাস্তাটাও অনেকটা মসৃণ করে দেবে।