Daily

২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারত কলা রপ্তানিতে প্রশংসনীয় ছাপ রেখেছে। ইকোনমিক টাইমসের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, গেল অর্থবর্ষে ১.৯১ লক্ষ টন কলা রপ্তানি করে ভারতের আয় হয়েছে ৬১৯ কোটি টাকা। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার আরও বেশি করে জোর দিচ্ছে কলা চাষে। স্বাভাবিকভাবেই, আমাদের বাংলায় কলা চাষ তো কম হয় না। দেশে যত কলা উৎপাদন হয়, তার প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ কলা উৎপাদন হয় এই বাংলাতেই। সুতরাং এটা স্পষ্ট যে কলা চাষ নিঃসন্দেহে একটি লাভজনক ফসল। যা শুধু প্রথাগত ভাবে ধান, পাট চাষের থেকে আর্থিকভাবে অনেকটাই এগিয়ে রাখে বাংলার কৃষিক্ষেত্রকে। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ সাধারণত হয়ে থাকে। তার মধ্যে যেমন রয়েছে, চাঁপা, জাবকাঁঠালি তেমনি আবার রয়েছে মালভোগ, মনুয়া বা জাহাজী। কিন্তু কলা চাষ করে একজন কৃষকের আয় কতটা হতে পারে? সেই উত্তর খুঁজতে আজ পৌঁছনো যাক আলিপুরদুয়ারে।
আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবড়ী বিষ্ণুনগর কলোনি। মূলত সঙ্কোশ নদীর ধারে অবস্থিত এই এলাকা। এখানেই বিজনেস প্রাইম নিউজের প্রতিনিধি কথা বললেন দুই কলা চাষির সঙ্গে। যারা অন্যান্য সময় টুকটাক সব্জির চাষ করলেও, মূলত কলা চাষকেই গুরুত্ব তাঁরা দিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন ফরহাদ আলি শেখ এবং অন্যজন শীতল সাহা। দুজনেই মন দিয়ে কলা চাষ করছেন বিঘের পর বিঘে জমি। এখানে অবশ্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হল মালভোগ কলা। বিগত ৬ বছর ধরে তাঁরা এই মালভোগ কলার চাষ করে আসছেন। তাঁদের বক্তব্য, ধান বা পাট চাষ করার যে হ্যাপা রয়েছে, কলাচাষে সেই হ্যাপা অপেক্ষাকৃত অনেকটাই কম। পরিশ্রমের সঙ্গে কলা চাষে খরচাও কম। ফলে, ঠিক মত যদি ফলন হয় তাহলে লাভের অঙ্কটাও বেশ ভালো থাকে।
পরিচর্যার প্রয়োজন সামান্য। তাতেই কলার ফলন চোখে দেখার মতন। বছরভর মূলত মালভোগ কলার চাষ হয় কারণ এই কলার চাহিদা আলিপুরদুয়ারে বেশ ভালোই থাকে। তবে উৎসবের মরশুমে কলার চাহিদা বাড়ে কয়েকগুণ। মানে দুর্গা পুজো, কালী পুজোর সময়টা কলা চাষিদের জন্য খুবই পয়মন্ত। একটি গাছ থেকে বছরে ৩-৪ বার ফলন পাওয়া যায়। আর এখানকার কলা বিক্রি হয় কোথায়?
সত্যিই তো। এখানে পাইকারি বাজার বলতে একটিই। ফলে অন্যান্য জায়গা থেকেও যদি পাইকাররা আসেন সেক্ষেত্রে কলা চাষিরাও একটু ভালো দামে কলা বিক্রি করতে পারবেন। কারণ, একটি গাছ থেকে বছরে তিন থেকে চার বার কলার ফলন পান কলা চাষিরা। এদিকে কলা চাষের আরও একটি সুবিধেও রয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় কলার ফলন খুব ভালো হওয়ার পাশাপাশি কলা গাছ ভূমিক্ষয় আটকাতে দারুণ কাজ করে। আর যে কারণে, কেউ তিন বছর তো কেউ ছ’বছর ধরে মন দিয়ে কলা চাষ করে চলেছেন। আর এদের দেখাদেখি এখন জেলার নদী তীরবর্তী এলাকার কৃষকদের মধ্যেও কলা চাষে তৈরি হচ্ছে ব্যপক আগ্রহ।
পিটিসি
অভিজিৎ চক্রবর্তী