একসময় অটো চালিয়ে সংসার ঠেলতেন কোনরকমে। এখন তাঁর মাসে আয় ৫০ হাজার টাকা। গ্রাম বাংলার বহু বেকার মানুষের কাছে তিনি স্বনির্ভরতার এক জলজ্যান্ত উদাহরণ। তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বামনগাছির হাবিবুর মণ্ডল। যিনি পাঁচ বছর আগে মাত্র ৫০ হাজার টাকা সম্বল নিয়েই উঠেপড়ে লেগেছিলেন নিজে কিছু করবেন বলে। আজ কিন্তু তিনি বামনগাছির বেশ পরিচিত নাম।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত এক নম্বর ব্লকের বামনগাছি স্টেশনে নেমে হাবিবুর মণ্ডলের কথা বললে যে কেউ দেখিয়ে দেবেন তাঁর ইন্টিগ্রেটেড ফার্ম। সাড়ে তিন বিঘা জমি। জমিতে একদিকে রয়েছে পুকুর। অন্যদিকে গোটা জমি জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন ফলের বাগান। আর এই ছায়ায় ঘেরা বাগানের মধ্যেই গত পাঁচ বছরে বেড়ে উঠেছে হাবিবুরের ইন্টিগ্রেটেড ফার্ম। যেখানে রয়েছে কোয়েল থেকে কড়কনাথ মুরগি। রয়েছে হোয়াইট পেকিন হাঁস থেকে ক্যাম্পবেল হাঁস। রয়েছে যমুনাপারি ছাগল থেকে বাংলার ব্ল্যাক গোট। রয়েছে টার্কি থেকে সোনালি মুরগি।

২০১৬ সালে হাবিবুর তখন অটো চালাতেন। সেই সময় মাত্র পাঁচটি মুরগি, ১৪টি হাঁস ও চারটি ছাগল নিয়ে শুরু করেন এই ফার্ম। বর্তমানে হাবিবুরের কড়া নজর এবং রাজ্য প্রাণী বিকাশ দফতরের মূল্যবান পরামর্শে সেই ফার্ম ফুলেফেঁপে উঠেছে।

তাঁর এই সাফল্যের গল্প অজানা নয় প্রাণী বিকাশ দফতরের। এমনকি তাঁদের পরামর্শ মেনে যদি গ্রাম বাংলার বেকার যুবকরা এই প্রাণী পালনে উৎসাহী হন তাহলে বেকারত্বের তকমা তো ঘুচবেই। সঙ্গে ভালো উপার্জনের দিশা খুঁজে পাওয়া যাবে।

ইতিমধ্যেই তাঁর কপালে জুটেছে বেশ কয়েকটি পুরস্কার। এখন জেলার সফল প্রাণী পালকদের মধ্যে হাবিবুরের নাম একইসঙ্গে উচ্চারিত হয়। এমনকি তিনি যেভাবে প্রাণী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে নিজের ফার্ম তৈরি করেছেন। সেভাবে অন্যান্য বেকার যুবকদের জন্য হাবিবুর মণ্ডল হয়ে উঠেছেন একজন আইডল। দিশা দেখাচ্ছেন উৎসাহী বেকার যুবকদের।

দেবস্মিতা মণ্ডল
উত্তর ২৪ পরগনা