Trending
সৌভাগ্যবান তো বটেই। একইসঙ্গে এই দেশের সবচেয়ে কাঙ্খিত ভাস্করও বটে। অরুণ যোগীরাজ। সম্ভবত, গুগলের সার্চ লিস্টের ট্রেন্ডিং মোস্ট নাম তিনি। কারণ? কারণ- তাঁর তৈরি রামলালার মূর্তি আজ বিশ্ববন্দিত।
তবে, মূর্তির গড়ন, মন্দিরের ঘরানা, তিলকের ধাঁচ, দক্ষিণী কারিগর— সব মিলিয়ে হঠাৎ দক্ষিণ ভারতকে নিয়ে এত মাতামাতি কেন? ভোটের আগে দক্ষিণ ভারতের মন পাওয়াই কী আসল কারণ? নাকি অন্যকিছু? কী বলছেন বিরোধীরা? আসব সেই প্রসঙ্গে। তবে তার আগে জেনে নেওয়া যাক শিল্পীর বিষয়ে কিছু কথা।
কর্ণাটকের ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ। পাঁচ পুরুষের ভাস্কর্য শিল্পের পরম্পরা ছেড়ে প্রথমে তিনি গতে বাঁধা জীবনকেই বেছে নিয়েছিলেন। এমবিএ পাশ করে বড়ো কর্পোরেট সেক্টরে মোটা মাইনের চাকরি করছিলেন তিনি। তবে, সবকিছু সেরে আবারও ছেনী-হাতুরি হাতে তুলে নেন তিনি। এবং অবশেষে সেই অসাধ্যসাধন।
রামমন্দির ট্রাস্টি বোর্ড চেয়েছিল, রামলালার তিনটি মূর্তি হবে। এবং সেখান থেকে একটি মূর্তি বেছে নেওয়া হবে। ডাক পড়েছিল তিন ভাস্করের। বেঙ্গালুরুর ভাস্কর গণেশ ভাট এবং তাঁর ছাত্র বিপিন ভাদোরিয়া, মাইসুরের অরুণ যোগীরাজ এবং জয়পুরের সত্যনারায়ণ পান্ডে। শেষপর্যন্ত রামলালার বিগ্রহ তৈরির জন্য বেছে নেওয়া হয় স্থপতি অরুণ যোগীরাজকেই। তবে, কেন যোগীরাজের মূর্তিকেই বেছে নেওয়া হল, সেই নিয়ে অন্য ইঙ্গিত দিয়েছেন বিরোধীরা। কী বলেছেন তারা? বলব। তবে তার আগে শুনুন কীভাবে শিল্পী তৈরি করলেন রামলালার এই দিব্যমূর্তি।
ট্রাস্টি বোর্ড কেমন বিগ্রহ চায় তার একটা আভাস দিয়েছিল। এরপর ২ হাজারের বেশি ফটোগ্রাফ নিয়ে গবেষণা করেন অরুণ। টানা ৬ মাস। দিনরাত ভুলে কষ্টিপাথর খোদাই করে একটু একটু করে রামলালা-র মূর্তি গড়েছেন এই তরুণ ভাস্কর। পাথর কুঁদে কুঁদে ফুটিয়ে তুলেছেন পাঁচ বছরের কমবয়সি ফুটফুটে এক শিশুকে। দিনের পর দিন সাত্ত্বিক আহার করেছেন।
কষ্টিপাথর কাটতে গিয়ে পাথরকুচি ছিটকে চোখটাই অন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তিনি হার মানেননি। কাজের ব্যাপারে তিনি বরাবরই একনিষ্ঠ। এর আগে কেদারনাথের আদি শঙ্করাচার্য এবং দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে ৩০ ফুটের নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর মূর্তিটিও তিনি তৈরি করেছিলেন। এবার তাঁর আরেক স্থাপত্য বিশ্বের দরবারে প্রশংসিত হল।
প্রসঙ্গত, মূর্তি থেকে সজ্জা- সর্বত্রই দক্ষিনী ছোঁয়া। নির্বাচনের আগে দক্ষিণ ভারতের ভোট ব্যাঙ্ক দখল করতেই কি মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা? উত্তর ভারতে ভালো ফল কড়ায় আত্মবিশ্বাসী মোদী সরকার। তবে, এখন কাঁটা দক্ষিণ ভারত। তাই চারশো পার করার গেরুয়া স্লোগানকে বাস্তবায়িত করতেই নাকি মোদীর এই নতুন মাস্টারপ্ল্যান বলে জানাচ্ছেন অনেকে। র্তির গড়ন, মন্দিরের ঘরানা, তিলকের ধাঁচ, দক্ষিণী কারিগর— সব মিলিয়েই তা স্পষ্ট। নির্বাচনের আগে দক্ষিণ ভারতের মন পেতেই কী মোদীর এই দক্ষিনি মাস্টারপ্ল্যান? আপনাদের কী মনে হয়? জানান কমেন্টবক্সে। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।