Story
রক্তজবার মালা থাকলে তবেই মা কালীর অঙ্গসজ্জা পরিপূর্ণতা পায়। কিন্তু লাল জবার জোগান সবসময় থাকে না মালাকার শিল্পীদের কাছে। এদিকে কালীপুজোয় লাল মালার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তাই মালার জোগান অব্যাহত রাখতে উত্তর দিনাজপুরের মালাকার শিল্পীরা একজোটে তৈরি করে চলেছেন কাপড়, সুতো ও প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি সুদৃশ্য লাল মালা।
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ, কাঞ্চনপল্লী, পালপাড়া এলাকার বেশ কিছু পরিবার বংশ পরম্পরায় তৈরি করে চলেছেন বিভিন্ন দেবদেবীর গলার মালা। মূলত কাপড়, কাগজ, প্লাস্টিক এবং সুতো দিয়ে এই মালা তৈরি করা হয়। চোখলতা, পাঁচফুল, জবাফুল রজনীলতা সহ বিভিন্ন ধরনের লাল মালা তৈরি করে থাকেন এখানকার মালাকার শিল্পীরা। বাড়ির মহিলারা এই মালা তৈরির কর্মযজ্ঞে মুখ্য ভূমিকা নিয়ে থাকেন। ছোট হলে এক ডজন আর বড় হলে তিনটে, চারটে মত মালা প্রতিদিন তৈরি করে থাকেন তাঁরা।
এই মালা তৈরির জন্য কাঁচামালের বরাত দেন ব্যবসায়ীরা। তারপর সেই কাঁচামাল দিয়ে মহিলা মালাকার শিল্পী সহ তাঁদের বাড়ির লোকেরা একজোটে মালা তৈরিতে মন দেন। অন্যান্যবার মালার চাহিদা ভালো থাকলেও এই বছর যেন লেগেছে ভাটার টান। তার উপর বেড়েছে কাঁচামালের দাম। সব মিলিয়ে পুজোর আগে মালার চাহিদা চিন্তায় রেখেছে ব্যবসায়ীদের। তবু আশা-ভরসায় রয়েছেন তাঁরা।
তবে এই কঠিন সময়ে মালাকার শিল্পীদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার যথেষ্ট ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। সরকার যে প্রয়োজনে তাঁদের সমস্ত সহযোগিতা করবে সেই বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন জেলা শিল্প কেন্দ্র আধিকারিক সুনীল চন্দ্র সরকার।
ডজন হিসেবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা মতন মজুরি পেয়ে থাকেন মালাকার শিল্পীরা। পারিশ্রমিক কম হলেও মালা তৈরির উদ্যমে কিন্তু একেবারেই ভাটা নামেনি। সংসারের সকল কাজ সামলে তাঁরা নিপুণ হাতে তৈরি করে চলেছেন মালা। যা ছড়িয়ে পড়ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
অনুপ জয়সোয়াল
উত্তর দিনাজপুর