Agriculture news
পূর্ব মেদিনীপুর। শস্য, আনাজের পাশাপাশি এই জেলার পরিচিতি বিশেষ ফুলের কারণে। পূর্ব মেদিনীপুরে ফুল চাষের মতন লাভজনক কিছু নেই। এই জেলায় কত বাহারি ফুলের চাষ হয়, তার হিসেব কর গুণে বলা মুশকিল। তবে বেল এবং জুঁই ফুলের চাষ যে দুর্দান্ত, তার প্রমাণ এই জেলার ফুল চাষিদের বয়ান। কিন্তু চাষের ইচ্ছা থাকলেও যে বাধা থাকেই। রোগপোকার আক্রমণ, অতি বৃষ্টি এসব কারণে বারবার ক্ষতিগ্রস্থ হয় বেল বা জুঁই ফুলের চাষ। তাহলে উপায়? এই বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন কোলাঘাটের ব্লক টেকনোলজি ম্যানেজার। আপনারাও যদি বেল বা জুঁই ফুলের চাষ করতে চান, তাহলে এই প্রতিবেদন আপনাকে কিছুটা হলেও হেল্প করবেই। জানতে হলে স্কিপ না করে দেখুন পুরো প্রতিবেদন।
পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, শহীদ মাতঙ্গিনী এবং অবশ্যই পাঁশকুড়া ব্লকে ভালোরকম চাষ হয় বেল এবং জুঁই ফুলের। যদিও জুঁই-এর থেকে বেল ফুলের চাষ আবার একটু বেশিই হয়। কারণ বেল ফুল শুধু গন্ধের জন্য নয়, ধর্মীয় কারণেও বিশেষ গুরুত্ব রাখে। তাই বেল ফুলের চাষ করে ভালো রকম লাভের মুখ দেখতে পান চাষিরা। যদিও এখানে একটা ছোট্ট কিন্তু রয়েছে। আর সেটা হল আবহাওয়ার মনমর্জির ওপর নির্ভর করে এই ফুল চাষের লভ্যাংশ। বৃষ্টির কারণে এমনিতেই ক্ষতির মুখে পড়ে বেল ফুলের চাষ। তার ওপর যদি রোগপোকার আক্রমণ হয় তাহলে ক্ষতির বহর বাড়বে বৈ তো আর কমবে না। তেমনই একজন ফুল চাষি বঙ্কিম মাইতির কাছে পৌঁছে গেছিল বিজনেস প্রাইম নিউজ। যিনি কোলাঘাট ব্লকের বাগুর গ্রামে বেল ফুলের চাষ করে থাকেন। এই দুর্ভোগের কথা বললেন তিনি নিজের মুখেই।
এখন বিষয়টা হচ্ছে, বেল ফুলের চাষে লাভ বেশি। খরচ সেভাবে নয়। যদি না পোকার আক্রমণ, অতি বৃষ্টির কোপে না পড়তে হয়। অনেকেই তো এই বেল ফুল চাষ করছেন। মুশকিল হচ্ছে, তাঁরা নিজেরা যেহেতু কৃষক, তাই বেল ফুল চাষের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় তাদের মাথায় রাখতে হয়। কিন্তু সকলেই যে এই বিষয়ে দারুণ পারদর্শী এমনটা কিন্তু নয়। ফলে ছোট ভুলের জন্য ক্ষতি হয় বেল ফুল চাষে। আর চাষের ক্ষতি মানে দিনের শেষে আয় কমে কৃষকের। তাই বেল ফুল চাষ যদি করতে হয়, তখন কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। কী বললেন কোলাঘাট ব্লকের ব্লক টেকনোলজি ম্যানেজার উৎপল কুমার বর্মণ সেটা শুনে নিই।
আশ্বিন মাসে গাছ লাগানো হয়। চৈত্র মাস থেকে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল হবে কার্ত্তিক মাস পর্যন্ত। বেল ফুল চাষে একবার গাছের ডাল লাগিয়ে চাষ শুরু করলে বহু বছর ওই গাছেই চাষ করা যায়। যদিও বছরে একবার গাছের ডাল কাটা হয়। একবার গাছ লাগানোর খরচ করলে চাষ করা যাবে দশ থেকে পনেরো বছর পর্যন্ত। বেল ফুলের দাম বাজারে যথেষ্টই থাকে। কেজিপ্রতি বিশেষ সময়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত পান কৃষক বন্ধুরা। তবে গড়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা সার্বিকভাবে বেল ফুল চাষিরা কেজিপ্রতি অর্থ পেয়ে থাকেন। স্থানীয় দেউলিয়া কিংবা কোলাঘাট ফুল বাজারে কৃষকেরা এই ফুল বিক্রি করে থাকেন। সব মিলিয়ে লাভদায়ক এই ফুল চাষে নির্ভরশীল জেলায় কয়েক হাজার ছোটবড় বেলফুলচাষি।
প্রসূন ব্যানার্জী
পূর্ব মেদিনীপুর