দেশে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যসরকারগুলির জনমুখী প্রকল্পগুলি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। আসলে সরকার এবং উপভোক্তাদের মাঝে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি কাজ করে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে। সেই মধ্যস্থতাকারীরাই এবার দিশেহারা নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে। বিশেষ করে সারা দেশের মত এ রাজ্যেও সরকারি প্রকল্পগুলি যেমন দুয়ারে সরকার ও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য শনি ও রবি ছুটির দিনেও খোলা রাখতে হচ্ছে ব্যাঙ্কের শাখা। অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি পড়ে গিয়েছে বেসরকারিকরণের আওতায়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে বেসরকারিকরণ করা হলে গরীব উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টগুলির হাল কি হবে তাই নিয়েই আলোচনা হয়ে গেল ব্যাঙ্ক কর্মচারী ও অফিসার্সদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভায় বারাসাতে। গৃহীত হল সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রস্তাব।

সম্প্রতি বারাসাতের কলোনি মোড়ে ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার শাখায় একটি বৈঠক করল অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন এবং অল ইন্ডিয়া ন‍্যশনালাইজড ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশন। বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ব্যাঙ্ক অফিসাররা একত্রিত হয়ে এই বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেন।

সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মুহূর্তে রাজ্য এবং কেন্দ্রের একাধিক প্রকল্প চালু আছে। এই প্রকল্পগুলির সুবিধা সাধারণ মানুষ পেয়ে থাকেন কারণ মধ্যস্থতা হিসেবে কাজ করে আসছে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি। তাঁদের বক্তব্য, যদি এভাবে বেসরকারিকরণ করে দেওয়া হয় তাহলে বিপদে পড়বেন সাধারণ মানুষেরাই। তাছাড়া এমন নয় যে দেশ জোরা কঠিন সময়ে সরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে ক্ষতির মুখ দেখতে হয়েছে। বরং লাভের অঙ্ক ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছে তারা। এরপরেও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত যে আসলে সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেবে সেকথা স্বীকার করে নিলেন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক এবং অল ইন্ডিয়া ন‍্যশনালাইজড ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সম্পাদক সঞ্জয় দাস।

রাজ্য জুড়ে ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে দুয়ারে সরকার বা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মত একাধিক জনমুখী প্রকল্প। যে কারণে মানুষের স্বার্থে শনি এবং রবিবারেও খুলে রাখতে হচ্ছে ব্যাঙ্কের শাখা। দিনের পর দিন ব্যাঙ্কগুলি যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে বেসরকারিকরণ যে আখেরে অনিশচয়তাকেই ডেকে আনবে, সেই কথা বলাই যায়। তাই এই প্রতিবাদের মঞ্চ। আর এরপরেও সরকার যদি নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে না সরে আসে তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে এই সংগঠনগুলি।

বিক্রম লাহা, উত্তর ২৪ পরগনা