Start-Up Business

ভারতে নির্বাচন উৎসবের থেকে কম কিছু নয়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের উৎসব। হাজার হাজার কোটি টাকা জলের মত খরচ হয়ে যায় একেকটি নির্বাচনে। এই এবারেই ধরুন না! ২০২৪ এর যে লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে নির্বাচন বাবদ খরচ হতে পারে প্রায় ১.৩৫ লাখ কোটি টাকা মত। তাহলে ভাবুন, একদিকে যখন এই টাকা খরচ হচ্ছে তার মানে অন্যদিকে কেউ আয় তো করছেই। তাই নির্বাচনী আবহে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব ৫ বিজনেস আইডিয়া। যা করলে এই আবহে আপনিও দারুণ মুনাফা করতে পারবেন। শুধু খেয়াল রাখতে হবে আর সুযোগের অপেক্ষা করতে হবে।
১। MERCHANDISE BUSINESS
ভোট আসছে থেকে একেবারে শেষ না হওয়া পর্যন্ত পলিটিক্যাল পার্টিগুলো নানাভাবে নিজেদের প্রোমোট করে যাতে ঘরে ঘরে পৌঁছনো সম্ভব হয়। শুধু সর্বভারতীয় দলগুলো নয়। আঞ্চলিক দলগুলো এই সময় নিজেদের সিম্বল প্রিন্ট করান। সেটা ফ্ল্যাগে হতে পারে, টুপিতে হতে পারে, স্কার্ফ হতে পারে আবার পেন-খাতাও হতে পারে। আপনাদের মনে হতে পারে, এই ধরণের বিজনেস! আসলে এই বিজনেসগুলোর কদর এই সময় থাকে একেবারে স্কাই টাচিং। কারণ হেভি কোয়ান্টিটিতে এগুলো সাপ্লাই করা হয় পার্টিগুলোকে। একটা তথ্য বলছে যে, এই ইলেকশনে পলিটিক্যাল পার্টিগুলো খরচ করছে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার। যা সব মিলিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের রুজিরুটির জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে। আর নির্বাচনী আবহে তো পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর তো ফ্ল্যাগ, স্কার্ফ বা টুপির মত জিনিসের কদর বাড়ে। তাই এই সময়ে এমন বিজনেস করাটা বেশ প্রফিটেবল।
২। FOOD BUSINESS
আপনার যদি নিজের এই বিজনেস থাকে তাহলে পোয়া বারো আর যদি না থাকে তাহলে এই সময় ফুড বিজনেসের মত আইডিয়া আপনি একেবারেই ইগনোর করতে পারেন না। দেখুন এই সময় প্রতিদিন নানা জায়গায় পটিক্যাল র্যালিগুলো চলে। যেখানে শয়ে শয়ে পার্টি ওয়ার্কার, সাপোর্টার সকলেই থাকেন। আর খালি পেটে তো মিটিং মিছিল হয় না। অতএব খাবারের প্রয়োজন রয়েছেই। আর খাবারের প্রাইস কি হবে সেটা তো অলরেডি ঠিক করে দিয়েছে ইলেকশন কমিশন। জেমনঃ চা-সিঙ্গাড়ার জন্য খরচ ১০ টাকা। যদি ভেজ বা নিরামিষ থালি হয় তাহলে ১০০ টাকা আর যদি নন-ভেজ বা আমিষ থালি হয় তাহলে খরচ ১৮০ টাকা। তাই কোন পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে যদি আপনি যোগাযোগ তৈরি করে ফুড সাপ্লাই-এর কাজটা করতে পারেন তাহলে নির্বাচনী আবহে ফুড বিজনেস যথেষ্ট প্রফিটেবল হতে পারে।
৩। DRONE BUSINESS
নির্বাচনের মরশুমে ড্রোনের কদর থাকে সপ্তমে। একের পর এক ক্যাম্পেন, একের পর এক র্যালি- আর এখানে ড্রোন আর ভিডিও ক্যামেরার প্রয়োজন পড়ে সবসময়। আর আপনাদের তো বললাম যে ইলেকশন কমিশন কিভাবে সব রেট চার্ট ঠিক করে দিয়েছে। ড্রোন ক্যামেরা যদি আপনি ১৫ মিনিটের জন্য ভাড়া দেন তাহলে আপনার আয় হবে ১৬ হাজার টাকা মত। তার মানে আপনি যদি ৫ হাজার টাকার মধ্যেও একটা ড্রোন ক্যামেরা কিনে নিতে পারেন আর যদি সেটা নির্বাচনের আবহে ভাড়ায় দিতে পারেন, তাহলে বুঝতেই পারছেন যে কতটা প্রফিটেবল হতে পারে এই বিজনেস।
৪। CAR BUSINESS
আপনার কাছে কি বড় কোন গাড়ি আছে? অথবা আপনি কি গাড়ি ব্যবসার সঙ্গে ইতিমধ্যেই জড়িয়ে রয়েছেন? তাহলে এই গাড়িকেই নির্বাচনী প্রচারে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু টাকা মুনাফা করতে পারবেন। চাইলে আপনি আপনার দুচাকাও ভাড়ায় দিতে পারেন। এটাই কিন্তু সেরা সময়। ইলেকশন কমিশন এখানেও একটা রেট চার্ট রেখেছেন। যদি আপনি একটা বাইক নির্বাচনী কাজে ভাড়ায় দেন তাহলে আপনি পাবেন দিনে ৩০০ টাকা। যদি ই-রিকশা ভাড়ায় দেন তাহলে পাবেন ৬০০ টাকা আর যদি আপনি একটা এসইউভি গাড়ি ভাড়ায় দেন, তাহলে মিলবে দিনে ৩ হাজার টাকা।
আর শেষে,
৫। FLOWER BUSINESS
নির্বাচনের সময় ফুলের কেমন ডিম্যান্ড থাকে সেটা আর আলাদা করে বলার তো কোন প্রয়োজন নেই। নেতামন্ত্রীদের জন্য যে ফুলের মালা আসে তার দাম ভ্যারি করে ৩ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। নির্বাচনের সিজনে ফুলের বিক্রি এমনিই একধাক্কায় বৃদ্ধি পায় ২০ শতাংশ মত। এই সময় হোলসেল মার্কেটে ডেলি ২.৫ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়। তার মানেটা পরিষ্কার। নির্বাচনের সুযোগটি হাতছাড়া করবেন না। আপনার পছন্দের কোন পলিটিকাল পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ করুন আর নির্বাচনী প্রচারে যত ফুলের প্রয়োজন তার সাপ্লায়ার হয়ে যান। ব্যস আর আটকায় কে?
বন্ধুরা, ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে এই প্রত্যেকটি বিজনেস আপনাকে মালামাল করে দেবে। শুধু প্রয়োজন সদিচ্ছা আর প্রপার লিঙ্ক। আর এই দুটো যদি আপনার হাতের মুঠোয় থাকে তাহলে আপনাকে যে ৫টা বিজনেস আইডিয়ার কথা বললাম দিনের শেষে সেখান থেকেই আয়ের অঙ্ক আরও বাড়তে শুরু করবে। আপনাদের কি মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন। আর সাবস্ক্রাইব করুন বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ