Daily
পুরুলিয়া। বাংলার সেই জেলা, যেখানকার সিংহভাগ মানুষের রুজিরুটির জোগাড় করে কৃষিকাজ। আর এটাই সেই জেলা যেখানকার বিঘের পর বিঘে জমি অনাবাদী হয়ে ওঠে শুধুমাত্র জলের অভাবে। পুরুলিয়া জেলার কৃষিকাজ মূলত বৃষ্টিপাত নির্ভর। তাই বর্ষাকালে টুকটাক চাষবাস হলেও, বাকি সময়টায় জমিগুলো পতিত অবস্থাতেই পরে থাকে। কিন্তু বৃষ্টি না হলে বিঘের পর বিঘে জমি অনাবাদী হয়ে পরে থাকবে? চাষিভাইরা সারাবছর কিছুই রোজগার করবেন না? একটা কোন বিকল্প উপায় তো চাই। এবার তাই জল কম লাগে, এমন কোন ফসল চাষের পরামর্শ দিল পুরুলিয়া জেলা কৃষিদপ্তর। আর শুধু পরামর্শই নয়। সঠিক প্রযুক্তি মেনে চাষআবাদ করলে যে রোজগারও বেশি হয় কৃষকবন্ধুদের, সেটাও প্রমাণ করে দেখালেন তারা।
পুরুলিয়া জেলার সেইসমস্ত উঁচু জমি, যা এতদিন অনাবাদী হয়ে পরে ছিল, সেখানেই চিনেবাদাম চাষ করছেন চাষিভাইরা। এছাড়াও চিনেবাদামের পাশাপাশি অড়হর ডাল বা অনান্য ডালশস্যও চাষ করছেন তারা। কৃষি দপ্তরের পরামর্শে পুরুলিয়া জেলার সাঁতুড়ি ব্লকের প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে এই চাষআবাদ শুরু করেছেন স্থানীয় এসএইচজি গ্রুপের মহিলারা মিলে। কেন এসএইচজি গ্রুপের মহিলাদের দিয়ে এই চাষের সিদ্ধান্ত নিল কৃষিদপ্তর? কৃষিদপ্তরে তরফ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে যে সমস্ত জমি পরে আছে এসএইচজি গ্রুপের মহিলাদের দিয়ে যদি চাষ করান হয় । সেই গ্রুপের মহিলাদের একটা এক্সট্রা আয় আসবে।
অনাবাদী জমিতে ডাল বা বাদাম জাতীয় শস্য চাষের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা। কেন? কীভাবেই বা চাষ করছেন তারা?
কী কী সার দিলে ফলন ভালো হতে পারে? শুনে নেব । তিনি বলেছেন যেহেতু এই মাটিতে বালির পরিমান বেশি উর্বরতা শক্তি অনেক কম এবং পদাথের পরিমাণ কম । এই মাটিতে গোবর সারের বাবহার করা হয়েছে ।
চিনাবাদাম চাষে নাকি মাটিতে নাইট্রোজেন জাতীয় সারের থেকেও ক্যালশিয়াম বা ফসফরাস জাতীয় সারের প্রয়োজন বেশি। আর এই পদ্ধতিতে চাষ করে এলাকার বিপুল পরিমাণে অনাবাদী জমিকে চাষের যোগ্য করেছে কৃষিদপ্তর। পতিত জমিতে ফসল ফলছে এবং তাতে আয়ও বাড়ছে। যেকারণে এই চাষের প্রতি উৎসাহ লক্ষ্য করা গেল স্বনির্ভর দলের মহিলাদের মধ্যেও।
জলের অভাবে প্রায় বিপন্ন হয়েছিল পুরুলিয়া জেলার কৃষি নির্ভর অর্থনীতি। আর আজ বিকল্প ফসল চাষের এই টোটকা ম্যাজিকের মতো কাজ করলো জেলার চাষিভাইদের রোজগার বাড়াতে। আগামীদিনে এরকম আরও অনেক জমিকে চাষের উপযোগী করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে কৃষিদপ্তরের। আর যেহেতু চাষিভাইদের রোজগারও বাড়ছে, তাই তারাও বেশ উৎসাহী এবং আশাবাদী কৃষিদপ্তরের এই সিদ্ধান্তে।
সন্দীপ সরকার
পুরুলিয়া