Trending
সৌরভ গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
সৌরভ গাঙ্গুলি, এ রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এ রাজ্যের কিছু মানুষ
তাহলে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরে কী এবার ব্যানড হতে চলেছেন?
ঠিক কী ঘটেছে? কেন প্রতারক হিসেবে কাঠগড়ায় তোলা হল দাদাকে? বলব আজকের প্রতিবেদনে। তবে হ্যাঁ! এ রাজ্যে এত বড় একজন মানুষের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠলো, অথচ প্রথম সারির কোন সংবাদমাধ্যমে তার কোন প্রচার নেই। কেন, কী বৃত্তান্ত- তার উত্তর অনেক কিছুই হতে পারে। সে বিষয়ে আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক। তবে আমরা বিজনেস প্রাইম নিউজ- বাংলার মানুষের রুজি-রোজগার নিয়ে কথা বলি- তাই এই খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব।
সরাসরি চলে যাব আসল খবরে। প্রথমেই আপনাদের সামনে তুলে ধরব সেই অভিযোগ পত্র, যেখানে একজন দুজন নয়। ১৫০ জন মিলে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন সৌরভ গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে। টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট না পাওয়ায় কলকাতার অন্যতম নামী সংস্থা হাইল্যান্ড গ্রুপের বিরুদ্ধে উঠেছে প্রতারণার এই অভিযোগ। নাম জড়িয়েছে সৌরভের।
হাইল্যান্ড গ্রুপের ঐ প্রোজেক্টে বিজ্ঞাপনের মুখ ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। যেখানে তিনি নিজের মুখে বলেছিলেন যে ঐ প্রোজেক্টে থাকবে একটা সৌরভ গাঙ্গুলি ক্রিকেট অ্যাকাডেমি। কিন্তু বাস্তবে দীর্ঘদিন কেটে গেলেও সেসব নিয়ে কোন কথা ওঠেনি এবং কোন ক্রিকেট অ্যাকাডেমি সেখানে গড়ে ওঠেনি। প্রতিশ্রুতি দিয়েও কোন কথা রাখেন নি তিনি। সারা জীবনের সঞ্চয় ভেঙে, ব্যাঙ্ক লোণ করে, পিএফ ভেঙে- আমরা সাধারণ মানুষেরা ফ্ল্যাট কিনি। এর দায় কে নেবে?
তাছাড়া ফ্ল্যাটের পিছনে টাকা ইনভেস্ট করে ফ্ল্যাট না পাওয়ার ঘটনা এ রাজ্যে নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতারনা চলে আসছে, এবং সরকার এ বিষয়ে নির্বাক। সরকারের ভূমিকা নিয়ে তো প্রশ্ন ওঠেই। একইসঙ্গে, যারা এই সমস্ত বিজ্ঞাপনের মুখ হিসেবে জড়ান, যাদের মুখ বিক্রি করা হয়, যাদের এক কথায় হাজার মানুষ নিজেদের সারাজীবনের পরিশ্রমটাও বিনিয়োগ করতে পারেন, তাদের ওপরেও কী এই প্রতারণার দায় বর্তায় না? তাদেরকেও কী বিশ্বাসঘাতক বলা যায় না? এতবড় অভিযোগের পরেও, এতগুলো মানুষের বিশ্বাস ভাঙ্গার পরেও দাদা চুপ কেন? শুধু টাকা নিয়ে প্রোডাক্ট প্রমোট করলেই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের দায় শেষ হয়ে যায় কী?
আচ্ছা আপনাদের কী মনে আছে? কিছুদিন আগেই নেসলে কোম্পানির ম্যাগি মশলার গুনমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। দীর্ঘদিনের জন্য বাজার থেকে ব্যান করা হয়েছিল ম্যাগিকে। তাহলে নিশ্চয়ই এটাও মনে আছে যে, সেই কোম্পানির বিজ্ঞাপনের মুখ, মানে অমিতাভ বচ্চন বা প্রিতি জিন্টার মতো আরও অনেকের হাতে কোর্টের তরফ থেকে নোটিশও এসেছিল। শো-কজ করা হয়েছিল তাদের। কিন্তু না! এ রাজ্যে প্রতারকদের নিয়ে কোন আলোচনা করা হয় না। বরং কিছুদিন পর গোটা বিষয়টা যত্ন করে ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হয়। হাইল্যান্ড পার্ক বা সৌরভ গাঙ্গুলির মতো ব্র্যান্ডের দাম দেওয়া হলেও সাধারণ মানুষের জীবন, পরিশ্রমের কোন দাম দেওয়া হয় না।
প্রসঙ্গত, অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, যে সৌরভ গাঙ্গুলির প্রচার দেখে, তার কথায় মান্যতা দিয়েই এই প্রজেক্টে টাকা ইনভেস্ট করেছিলেন কিছু মানুষ। সেই ফ্ল্যাটেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে অসামাজিক কাজ। না এসবের দায় সৌরভ গাঙ্গুলির নয়। কিন্তু সৌরভ গাঙ্গুলি ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রতিশ্রুতি তিনিই দিয়েছিলেন। ১০ বছর পর ঐ ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা অশ্বডিম্ব ছাড়া কিছুই পান নি। এত বড় একজন মানুষ যখন কোন কথা দেন, এবং সেই কথায় কিছু মানুষ আগে-পিছে চিন্তাভাবনা না করে সারা জীবনের পরিশ্রমের টাকা বাজি ধরেন, তখন সেই অভিযোগের দায় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের ওপর বর্তায় বৈকি।
এখনও তিনি কুলুপ এঁটেই থাকবেন, নাকি ঘনিষ্ট কিছু সাংবাদিকদের নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক শেষে দায় ঝেড়ে ফেলবেন- সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট নয়। কিন্তু বাংলার মধ্যবিত্ত- নিম্নমধ্যবিত্তের রুজি রোজগার নিয়ে ছেলেখেলা করা হলে, প্রশ্ন উঠবে। আর যাই হোক, রুজি-রোজগার তো বানের জলে ভেসে আসে না। টাকাও গাছে ফলে না।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ