Trending
ফের শেয়ার কারচুপির অভিযোগের মুখে আদানি
৫ শতাংশ দরপতন আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দরে
আদানির জেরে শুক্রবার সকাল থেকে রক্তাক্ত শেয়ার বাজার
আপনারা যারা আদানি গোষ্ঠীর স্টকগুলোতে ইনভেস্ট করেছেন, তারা কী আজকের পোর্টফলিওটা চেক করেছেন? দেখেছেন আদানি গোষ্ঠীর স্টকের দরপতন? এক বার নয়। বারবার শেয়ার কারচুপির অভিযোগে পড়ছেন এই ধনকুবের। যতবার অভিযোগ উঠছে ততবারই গা বাঁচিয়ে নিচ্ছেন মিস্টার আদানি। বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান। এইবারে জর্জ সেরোস তোমার বধিবে পরান।
জর্জ সেরোস, সেই লোকটা যার আশকারায় ইনভেস্টিগেশন চালিয়েছিল অরগানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন প্রোজেক্ট নামে এক নন প্রফিট অর্গানাইজেশন। আর এবার তাদের অভিযোগের গেরোয় এমন ফেঁসেছেন ধনকুবের আদানি, যে বাঁচবার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। শুরু হয়েছে হিন্ডেনবারগ ২.০ চ্যাপ্টার।
বৃহস্পতিবার থেকেই শেয়ার মার্কেটে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকে আদানি গোষ্ঠী। শুক্রবার থেকে শুরু হয় রক্তপাত। Adani Power, Adani Energy Solutions, এবং Adani Green -এর শেয়ারের দাম ৪-৫% করে হ্রাস পায়। হুহু করে দরপতন হতে থাকে Adani Ports এবং Adani Enterprises-এরও। আর এই সব কিছুর নেপথ্যে সর্ষের মধ্যেই ভুতের হদিশ পেয়েছে রিপোর্ট। আরও কী কী বলছে রিপোর্ট? দেখুন বিস্তারিত।
বেআইনি লেনদেনের হিন্ট দিয়েছে রিপোর্ট। ঘুরপথে নিজস্ব শেয়ার কিনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অপরাধে নাম জড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠীর। এবার আপনারা প্রশ্ন করতেই পারেন, এই ঘটনাকে অপরাধ বলা হচ্ছে কেন? হচ্ছে, কারণ এটা সেবি-র নিয়মবিরুদ্ধ। সেবি-র নিয়ম অনুযায়ী, ৭৫%-এর বেশি সংস্থার অংশিদারিত্ব নিজেদের হেফাজতে রাখা যাবে না। কিন্তু তদন্ত বলছে অন্য কথা। ওসিসিআরপি-র রিপোর্টে রীতিমত দাবি করা হয়েছে যে, ‘বেনামি’ বিনিয়োগকারীরা অফশোর কাঠামোর মাধ্যমে আদানি গ্রুপের স্টকগুলি কিনেছেন এবং বিক্রি করেছেন। না, অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার মত নয়। কারণ এই অভিযোগের ভিত্তিতে কমপক্ষে দুটি ভ্যালিড ক্ষেত্র হাইলাইট করেছে তারা।
এবারে আসি, সর্ষের মধ্যে ভুতের হিন্ট কেন দিয়েছে রিপোর্ট? রিপোর্টে জ্বল জ্বল করছে দুজন ব্যাক্তির নাম। আরব আমিরশাহীর নাসের আলি শাবান আহলি এবং তাইওয়ানের চ্যাং চুং লিং। তদন্ত বলছে, ২০১৬ সালের জুন মাসে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করা হয়। আদানি গ্রুপের চার সংস্থা অর্থাৎ Adani Power, Adani Enterprises, Adani Ports এবং Adani Transmission -এর ৮ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত ফ্রি ফ্লোট শেয়ার ছিল দু’টি ফান্ডের কাছে। যারা আবার আদানি গোষ্ঠীর প্রমোটারদের মাধ্যমেই পরিচালিত হত। দীর্ঘদিন ধরে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে বলে অকপট দাবি করেছে ওসিসিআরপি। এবং তারা মরিশাসের দু’টি লগ্নি সংস্থার মাধ্যমে আদানি গোষ্ঠীতে ইনভেস্ট করেছে এবং মুনাফাও কুড়িয়েছে, সেই দাবিও তুলেছে রিপোর্ট।
হিন্ডেনবারগের অভিযোগের বাঁধন থেকে এখনও মুক্তি পায়নি মিস্টার আদানি। আর তার আগেই আবারও একই ছকে নিশানায় আদানি। আর ঠিক একইভাবে অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার আঁটসাঁট পরিকল্পনাও। পাল্টা জর্জ সরোসের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ম্যানুপুলেশনের অভিযোগ তুলেছে আদানি। কারণ এই অভিযোগ নাকি ১০ বছরের পুরনো। যার ক্লিনচিট ২০২৩-এই দিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু ওসিসিআরপিও নাছোড়বান্দা। একেবারে আদা জল খেয়ে তদন্তে নেমে পড়েছে। পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে তারা। তাহলে কি আহলি এবং চ্যাং এই প্রোমোটারদের হয়েই কাজ করেছে? তা যদি হয়, তবে তো নিজেদের গোষ্ঠীর ৭৫ শতাংশের বেশি শেয়ার আদানিদের নিজেদের দখলেই ছিল। এটা তো সেবির নিয়মবিরুদ্ধ! অভিযোগের জেরে আপাতত নিম্নমুখী আদানি শেয়ারের দাম। জট কবে কাটে, এখন সেটাই দেখার।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ