Academy

সারা বিশ্ব এখন এআই জাদুতে মত্ত। বর্তমানে এই এআই কথাটির সঙ্গে পরিচিত নয় এমন মানুষের সংখ্যা কম। এই এআই আসলে কি? মানুষের বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে বাস্তবে রূপ দেওয়াই হল এআই অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। গোটা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারত ও এই এআই প্রভাবে প্রভাবিত।
কিন্তু এই নিয়ে সরকারি স্তরে এতদিন কোনো নির্দিষ্ট কাঠামো ছিল না। খুব সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রক এই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে। তৈরি করেছে এক নতুন ফ্রেম ওয়ার্ক। এই উদ্যোগের মূলত দুটি উদ্দেশ্য। প্রথমতঃ এই নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারতের কর্মশক্তিকে আরও শক্তিশালী করা এবং দ্বিতীয়তঃ একেবারে শিশুকাল থেকেই ভারতের ছাত্রছাত্রীদের এই নতুন প্রযুক্তিতে শিক্ষিত করে তোলা। এই এআই ফ্রেমওয়ার্ক কি হবে তা বিস্তারিতভাবে দেখাশোনা করতে ১৮ সদস্যের একটি হাইপাওয়ার কমিটিও তৈরি হয়েছে।
এই নতুন ফ্রেমওয়ার্কের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যঃ
১) ভারতকে এআই এর সুপার পাওয়ার করে তোলা
২) নতুন নতুন আবিস্কার ও ব্যবসাবাণিজ্য স্টার্ট আপ কে উৎসাহ দেওয়া
৩) ভারতের কাজের বাজারে এই এআই এর ব্যবহারকে নিশ্চিত করা
৪) সর্বোপরি এআই সম্বন্ধে মানুষকে শিক্ষিত করা এবং তাকে সৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেওয়া
৫) দায়িত্ববান এআই এথিক্স তৈরি করা।
এই নতুন প্রযুক্তির জন্য সারা বিশ্ব সহ ভারতে যেমন বহু মানুষ কাজ হারাবেন ঠিক তেমনি আবার অনেক নতুন নতুন কাজের রাস্তাও খুলে যাবে। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের এই বছরের রিপোর্ট অনুসারে এই নতুন প্রযুক্তি না জানার কারণে প্রায় ৮ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ কাজ হারাবেন আবার একইসঙ্গে এই এআই এর ওপর নির্ভর করেই চাকরির ক্ষেত্রে তৈরি হবে প্রায় ৬ কোটি নতুন কর্মসংস্থান। স্বাস্থ্য, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, ম্যানুফ্যাকচারিং, লজিস্টিক্স, পুলিশিং, সাইবার ক্রাইম শনাক্তকরণ, দেশের নিরাপত্তা এবং কৃষিক্ষেত্রে এই এআই ব্যবহারের সুযোগ বাড়বে।
ন্যাসকমের চলতি বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী এআই জানা দক্ষ শ্রমিকের চাহিদার তুলনায় জোগানের ফারাক প্রায় ৫১%। এই ফারাক মেটানোর জন্য নতুন কমিটি বিভিন্ন ধরণের সুপারিশ তৈরি করবে এবং দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে সচেষ্ট হবে। এই সুপারিশের আসল কথা হল একেবারে স্কুল লেভেল থেকেই এই প্রযুক্তির শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে যাতে পড়ুয়ারা কোথায়, কীভাবে এই এআই ব্যবহার করা জেতে পারে তা শিখতে পারে। শুধু স্কুলই নয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও পড়াশুনার বিষয় যাই হোক না কেন প্রতিটি কোর্সে অন্তত ১০% হতে হবে এআই সঙ্ক্রান্ত। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষন দিতে হবে।
নিঃসন্দেহে এই উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে এই উদ্যোগ বাস্তবে কার্যকর হতে কত সময় লাগবে তা একমাত্র ভবিষ্যতই বলতে পারবে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ