Daily
২০১৬ তারপর ২০২৩। আবারও সাধারণ মানুষের মনে ফিরল নোট বাতিলের সেই দিনগুলোর স্মৃতি। তবে এবার ৫০০ এবং ১ হাজার টাকা নোটের রেশ ধরেই বাতিল করা হচ্ছে ২ হাজার টাকার নোট। শুধু ফারাক একটাই। গত বার যেমন সাধারণ মানুষের মনে চরম উৎকণ্ঠা জমা হয়েছিল, এবারে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এতটা হবে না বলেই মনে করছেন অনেকে। কিন্তু কেন? আর কেনই বা ২ হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া? আসুন এই নিয়েই শুরু করি আজকের ছোট্ট প্রতিবেদন।
প্রথমেই বলি, কেন ২ হাজার টাকার নোট ছাপানোর পরিকল্পনা সেই সময় নেওয়া হয়? রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ২০১৬ সালে যখন ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত রাতারাতি নেওয়া হয়, তখন বাজারে নোটের ঘাটতি তৈরি হওয়া ছিল কার্যত নিশ্চিত। সেই ঘাটতি পূরণের জন্যই ২ হাজার টাকার নোট ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেয় দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক আরবিআই। কিন্তু অদ্ভুতভাবে দেখা গেল যে, ২ হাজার টাকার নোট নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন একটা আগ্রহ তৈরি হয়নি। এছাড়াও মনে করা হচ্ছে, ২ হাজার টাকার নোট নিয়ে তখন যেসকল কথা বলা হয়েছিল, সেটা কোনভাবেই সাধারণ মানুষের স্বার্থ পূরণ করতে পারেনি। এতো বড় অঙ্কের নোট সাধারণ মানুষদের জন্য সমস্যা তৈরি তো করেইছিল। একইসঙ্গে খুচরো ব্যবসায়ীদের এই ২ হাজার টাকার নোট চরম সমস্যায় ফেলে দেয়।
স্বাভাবিকভাবেই, আগ্রহ তৈরি না-হওয়ায় নতুন করে ২ হাজার টাকার নোট ছাপানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটি তথ্য বলছে, ২ হাজার টাকার নোট ছাপানো বন্ধ করে দেওয়া হয় ২০১৮-১৯ সালেই। বলা হচ্ছে, বাজারে বর্তমানে যে পরিমাণ ২ হাজার টাকার নোট রয়েছে তার ৮৯% বাজারে ছাড়া হয়েছিল ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একটা বিষয় লক্ষ্য করেছিল যে, ২ হাজার টাকার নোট ব্যবহার করে লেনদেনের সংখ্যা বছর বছর যেন নিচের দিকেই নামছে। ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ যেখানে ২ হাজার টাকার নোটের পরিমাণ ছিল ৬.৭৩ লক্ষ কোটি টাকা, সেখানে অঙ্কটা কমে হয় ৩.৬২ লক্ষ কোটি টাকা ২০২৩ সালে এসে। জানতে পারা গিয়েছে, ২ হাজারের প্রায় ১৮১ কোটি নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়বেন না সাধারণ মানুষ?
অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, এবারে সেই ভয়টা তেমন নেই। মানুষকে তেমন উৎকণ্ঠাতেও কাটানোর প্রয়োজন নেই। কারণ এবার সময়টা পাওয়া গেছে বেশ কিছু মাস। প্রিয় দর্শকদের জন্য জানিয়ে রাখি, ২ হাজার টাকার নোট বৈধ থাকবে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ২ হাজার নোট জমা দিয়ে গ্রাহকদের অন্য নোট নিতে কোন অসুবিধা হবে না। ২৩ মে থেকে জমা দেওয়া যাবে এই নোট। একসঙ্গে ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া যাবে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে, হ্যাঁ, ইতিমধ্যেই ২ হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শুরু হয়েছে চরম মতবিরোধ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একে ধোঁকা হিসেবেই দেখেছেন। আপনিও কি একই মতে বিশ্বাসী? ২ হাজার টাকার নোট বাতিলের পিছনে আর কী কারণ থাকতে পারে?
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ