Trending
উমার আগমনের অপেক্ষায় সারাবছর পার করে আট থেকে আশি। মায়ের নিরাকার মূর্তির দিকে চেয়েই যেন মায়ের সাকার রূপ দর্শন করেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু যে শিল্পীদের ছোঁয়ায় মায়ের নিরাকার মূর্তি প্রাণ পায় সেই মানুষগুলোই আজ চরম সঙ্কটের সম্মুখীন। মূর্তির কথা উঠলেই মনে পড়ে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শহর কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির মৃৎশিল্প। বরাবরই জগৎবিখ্যাত এখানকার মূর্তি। কিন্তু করোনা কেড়ে নিয়েছে এখানকার মৃৎশিল্পীদের রাতের ঘুম। আগের বছর থেকেই মূর্তির চাহিদা সেভাবে নেই। তাই আজ এই অসহায় অবস্থায় ওখানকার মৃৎশিল্পীদের খবর নিতে পৌঁছে গেল বিজনেস প্রাইম নিউজ। কি বললেন মৃৎশিল্পী সুদীপ্ত পাল।
কৃষ্ণনগর মূল শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পৌর এলাকার ঘূর্ণি যা পুতুলপট্টি বলে খ্যাত। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার সহ কয়েকশো মৃৎশিল্পী রয়েছেন এই ঘূর্ণিতে। ঘূর্ণির মৃৎশিল্পের কাজ এ রাজ্য থেকে দেশ এবং বিদেশেও যথেষ্টই নাম-যশ রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় দু’বছর লকডাউন এর জেরে অনেকটাই সমস্যায় পড়েছেন এখানকার মৃৎশিল্পীরা। তাদের অবস্থার কথা শোনালেন আরেক মৃৎশিল্পী জয়ন্ত পাল।
আগে একজন শিল্পী অন্তত ২৫ থেকে ৩০ টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতেন। কিন্তু বর্তমানে এই মহামারীর কারণে মাত্র তিন থেকে চারটি অর্ডার পেয়েছেন এই মৃৎশিল্পীরা। স্বাভাবিক ভাবেই মাটির মূর্তির পাশাপাশি ফাইবারের মূর্তি দিকে ঝুঁকছেন শিল্পীরা।
প্রত্যেক বছর বিদেশে মূর্তির চাহিদা থাকলেও আগের বছর সেই মূর্তির চাহিদা কিছুটা কমেছিল। আর এবছর পরিবহন খরচা অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় সেই চাহিদাও তলানিতে এসে ঠেকেছে।
মূর্তির চাহিদা কম হওয়ায় বেশ কষ্টেই দিন পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। তাঁরা আক্ষেপের সুরে দাবি করেছেন সরকারের কাছে যাতে মৃৎশিল্পীদের জন্য বিশেষ করে ঘূর্ণির শিল্পীদের জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তা করে রাজ্য সরকার।
যে শিল্পীরা মায়ের মূর্তিতে প্রাণদান করেন তারাই আজ চরম সঙ্কটের সম্মুখীন। এবছর কি মায়ের কৃপা দৃষ্টি পড়বে তাঁদের উপরে? উত্তর সময়ই দেবে।
রনি চ্যাটার্জি, নদিয়া